[email protected] বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ট্রাইব্যুনালে সেনা মোতায়েন চেয়ে সেনাসদরে সুপ্রিম কোর্টের চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ৮:০২ পিএম

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ

হাসিনা ও আরও দুইজনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা বাড়াতে সেনা মোতায়েনের অনুরোধ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্ট সেনাসদরে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন রোববার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করে।

আগামী সোমবার (১৭ নভেম্বর) চব্বিশের জুলাই গণহত্যা মামলার ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করা হবে। এই রায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে, যাতে দেশ-বিদেশের মানুষ তা প্রত্যক্ষ করতে পারে। পাশাপাশি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায় বিচারকাজ দেখানোর ব্যবস্থা করবে।

সূত্র বলছে—শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে রায় দেখার অপেক্ষায় পুরো দেশ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বিষয়টির দিকে নজর রাখছে। তাই স্বচ্ছতা ও উদাহরণ তৈরির লক্ষ্যে রায়টি সরাসরি দেখানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মামলার রায় ঘোষণার জন্য ১৭ নভেম্বর দিন ঠিক করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ১৩ নভেম্বর দুপুরে চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার এবং সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী এ সিদ্ধান্ত দেন।

প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদসহ আরও অনেকে। গত ২৩ অক্টোবর সমাপনী যুক্তি উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধে উচ্চপর্যায়ের নেতৃত্বদের বিচারের উদাহরণ তুলে ধরে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। এরপর রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী ও পক্ষগুলোর পাল্টা যুক্তির পর রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করা হয়।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও এ মামলার আসামি হলেও তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে কথা বলেছেন। তাই তার বিষয়ে প্রসিকিউশনের অবস্থান ট্রাইব্যুনালের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তার আইনজীবী খালাস চেয়েছেন। শেষ পর্যন্ত তিনি মুক্তি পাবেন নাকি দণ্ডিত হবেন—তা জানা যাবে রায় ঘোষণার দিন।

এই মামলায় মোট ৮৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ৩ আগস্ট এবং শেষ হয় ৮ অক্টোবর তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরা দিয়ে। পরে ২৩ অক্টোবর শেষ হয় উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক।

আসামিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে—উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা এবং আশুলিয়া এলাকায় লাশ পোড়ানো। মামলার অভিযোগপত্রের আয়তন প্রায় আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠা; যার মধ্যে তদন্ত ও দালিলিক প্রমাণ, জব্দতালিকা এবং শহীদদের তালিকায় বিশাল পরিমাণ তথ্য অন্তর্ভুক্ত। তদন্ত সংস্থা গত ১২ মে প্রতিবেদন জমা দেয় চিফ প্রসিকিউটরের কাছে।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর