জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী
অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং আরও একজন আসামির রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায় ঘোষণা করা হবে আগামী ১৭ নভেম্বর (সোমবার)।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর ১২টা ৯ মিনিটে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই তারিখ নির্ধারণ করেন। প্যানেলের অন্য দুই বিচারক হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এদিন প্রসিকিউশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম ও ফারুক আহাম্মদসহ অন্যান্যরা।
গত ২৩ অক্টোবর মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি আন্তর্জাতিক পরিসরে বিভিন্ন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও শীর্ষ নেতাদের মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচারের উদাহরণ তুলে ধরে শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ শাস্তির আহ্বান জানান। এরপর আসামিপক্ষের রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীদের বক্তব্যের জবাব দেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম এবং পরে ডিফেন্স কাউন্সেল আমির হোসেন পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করেন। সবশেষে ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার জন্য ১৭ নভেম্বর দিনটি নির্ধারণ করে।
এ মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের নামও রয়েছে। তবে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। প্রসিকিউশন জানিয়েছে, তার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আদালতের ওপরই নির্ভর করবে। মামুনের আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ তার খালাস চেয়েছেন। ফলে রায়ের দিন জানা যাবে, সাবেক এই পুলিশপ্রধানের ভাগ্যে কী ঘটছে।
মামলায় মোট ৮৪ সাক্ষীর মধ্যে ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় চলতি বছরের ৩ আগস্ট এবং শেষ হয় ৮ অক্টোবর, যখন তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরা সম্পন্ন হয়। এরপর ২৩ অক্টোবর প্রসিকিউশন ও ডিফেন্সের যুক্তিতর্ক শেষ হয়।
প্রসিকিউশন আসামিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ এনেছে— উসকানি, অস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যাকাণ্ড এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো। মামলার নথিপত্র বিশাল আকারের: মোট ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠা, যার মধ্যে তথ্যসূত্র ২,০১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও প্রমাণাদি ৪,০০৫ পৃষ্ঠা, আর শহীদদের তালিকার বিবরণ ২,৭২৪ পৃষ্ঠা। তদন্ত সংস্থা গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে মামলার প্রতিবেদন জমা দেয়।
এসআর
মন্তব্য করুন: