রাজধানী ঢাকায় সোমবার সন্ধ্যায় একাধিক স্থানে বাসে আগুন দেওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচির আগে এমন ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
ডিএমপি জানিয়েছে, ১৩ নভেম্বরের কর্মসূচি ঘিরে বৃহস্পতিবার রাজধানীতে প্রায় ১৭ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন।
উল্লেখ্য, ওই দিনই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলার রায় ঘোষণার কথা রয়েছে। মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন (রাজসাক্ষী হিসেবে)।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, সোমবার সকাল ও সন্ধ্যায় রাজধানীর বাড্ডা, শাহজাদপুর ও ধানমন্ডি এলাকায় তিনটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। ধানমন্ডির মিরপুর রোডে ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসেও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া মিরপুর, মোহাম্মদপুর, খিলগাঁও, বাংলাদেশ বেতার ভবন ও এনসিপির প্রধান কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে পুলিশ জানায়, মোটরসাইকেলে হেলমেট পরা কয়েকজন ব্যক্তি দ্রুত এসে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়।
ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, “ঘোষিত অবৈধ কর্মসূচি ঠেকাতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হবে।”
রাজধানীর প্রবেশপথ, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও আবাসিক এলাকায় তল্লাশি ও টহল জোরদার করা হয়েছে। হোটেল, গণপরিবহন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হোস্টেলেও অভিযান চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষিদ্ধ সংগঠনের প্রচারণা পর্যবেক্ষণেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৩৪ জন নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ঝটিকা মিছিল ও নাশকতার পরিকল্পনাকারীরাও রয়েছে বলে জানা গেছে।
ডিএমপি সোমবার এক গণবিজ্ঞপ্তিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকার আশপাশে সব ধরনের সভা, সমাবেশ, মানববন্ধন ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সর্বোচ্চ প্রস্তুত রয়েছে। নাগরিকদের সহযোগিতা পেলে এ ধরনের চোরাগোপ্তা হামলা প্রতিরোধ আরও সহজ হবে।”
অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, সাম্প্রতিক ককটেল হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার এক যুবক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। রাজধানীর সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও গির্জায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: