সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি ও ভুয়া দলিল নিবন্ধনের ঘটনায় একাধিক দপ্তরে অভিযোগ করেও কার্যকর প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষিবিদ মো. মাঈন উদ্দিন।
তার দাবি, নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে জাল দলিল তৈরি করে জমি দখলের চেষ্টা চালানো হয়েছে।
তিনি জানান, ২০১৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর কাঠালী মৌজার ১৭৮৭ নম্বর একটি দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়। এতে দাতা হিসেবে মোজাম্মেল হক এবং গ্রহীতা হিসেবে মাছুদুল হকের নাম ব্যবহার করা হয়। অথচ ওই দাগে মোজাম্মেল হকের কোনো জমি ছিল না। দলিল লেখক ও সাব-রেজিস্ট্রারের সহযোগিতায় জাল দলিল নিবন্ধনের পর তা দিয়ে খারিজ আবেদন করে নতুন খতিয়ান সৃষ্টি করা হয়। স্থানীয় ভূমি অফিসও বানোয়াট প্রতিবেদন দিয়ে এ জালিয়াতিকে প্রশ্রয় দেয়।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মাঈন উদ্দিন এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ভুয়া দলিলের মাধ্যমে প্রভাবশালী চক্র ভুয়া মালিক সেজে ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা ঋণ তুলছে। এতে দেশের ব্যাংক খাত আরও খেলাপি ঋণের বোঝায় জর্জরিত হচ্ছে।
অভিযোগকারী জানান, বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানালেও সঠিক তদন্ত হয়নি।
নোয়াখালী পুলিশের পিবিআই শাখা এক তদন্তে দুর্নীতির প্রমাণ না পাওয়ার পক্ষপাতমূলক রিপোর্ট দেয়। পরে নারাজি দিলে বর্তমানে আদালতের নির্দেশে মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে। এ ছাড়া তিনি ২০২৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর নোয়াখালী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন, যা এখন তদন্তাধীন।
তার দাবি, সরকারি কর্মকর্তারা ভুয়া ও কাল্পনিক কাগজপত্র তৈরি করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে।
অফিসে নিয়মতান্ত্রিক কাজ বছরের পর বছর ঝুলে থাকে এবং দালালদের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের ঘুষ আদায় করা হয়। এতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও দুর্নীতিবাজ চক্র দ্রুত সম্পদশালী হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি দুর্নীতি দমনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
তার প্রস্তাব— দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে দোষীদের চাকরিচ্যুত করা, আইনগত শাস্তি দেওয়া এবং অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার বিধান চালু করা।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষিবিদ মাঈন উদ্দিনের দুই ভাই মো. মহাসিন ও মাহফুজুল হক টিপু উপস্থিত ছিলেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: