[email protected] শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫
২০ আষাঢ় ১৪৩২

ইতালির নাগরিক তাবেলা হত্যা: তিনজনের যাবজ্জীবন, চারজন খালাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩ জুলাই ২০২৫ ৩:৪৪ পিএম

সংগৃহীত ছবি

রাজধানীর গুলশানে ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজারকে হত্যা মামলায় তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

একই মামলায় অপর চার আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন:

  • তামজিদ আহমেদ ওরফে রুবেল
  • রাসেল চৌধুরী
  • মিনহাজুল আরেফিন ওরফে ভাগনে রাসেল

খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন:

  • বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুম
  • তার ভাই আবদুল মতিন
  • শাখাওয়াত হোসেন
  • সোহেল

মামলার কার্যক্রমে দেখা যায়, তামজিদ, রাসেল, মিনহাজুল, মতিন ও শাখাওয়াত আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। তবে বিচারিক পর্যায়ে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ না থাকায় চারজনকে খালাস দেওয়া হয়।

রায় ঘোষণার দিন সব আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এর মধ্যে এম এ কাইয়ুম ও সোহেল দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন, মতিন ছিলেন জামিনে, এবং বাকি চারজন ছিলেন কারাগারে।

২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায়, গুলশান ৯০ নম্বর সড়কের পশ্চিম প্রান্তে, গভর্নর হাউজের পাশের ফুটপাতে তাবেলা সিজারকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তিনি ছিলেন নেদারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিসিও-বিডি’র কর্মকর্তা।

স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর একটি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েবসাইটে দাবি করা হয় যে, আইএস (ইসলামিক স্টেট) এই হত্যার দায় স্বীকার করেছে।

তাবেলা হত্যার পর গুলশান থানায় মামলা করেন আইসিসিও কো-অপারেশনের বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি হেলেন দার বিক। মামলায় অজ্ঞাত তিন ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ২৮ জুন ডিবি পরিদর্শক গোলাম রাব্বানী এ মামলায় বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ কাইয়ুমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। এরপর একই বছরের ২৪ আগস্ট আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল “একজন বিদেশি শ্বেতাঙ্গ নাগরিককে হত্যা করে দেশ-বিদেশে আতঙ্ক ছড়ানো এবং বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি নষ্ট করা।”

  • মামলায় মোট আসামি ছিলেন ৭ জন
  • ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
  • ৪ জন সন্দেহাতীতভাবে মুক্তি পেয়েছেন
  • রায় ঘোষণার সময় সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন

এই মামলার রায় দেশে-বিদেশে আলোচিত একটি হত্যাকাণ্ডের বিচারিক প্রক্রিয়ার একটি বড় ধাপ। যদিও কিছু আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে, তবে রায়ে আদালত স্পষ্ট করেছেন যে, হত্যাকাণ্ডের পেছনে সুপরিকল্পিত উদ্দেশ্য ছিল।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর