[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
১২ আষাঢ় ১৪৩২

মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৬ জুন ২০২৫ ২:৪৪ পিএম

সংগৃহীত ছবি

মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনের কারণে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, “মাদক জনস্বাস্থ্য, আইনশৃঙ্খলা ও অর্থনীতির জন্য বড় হুমকি। মাদক আসক্তির কারণে দেশের বিপুল সংখ্যক তরুণ কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে, যা উন্নয়নের পথে বড় বাধা। একটি আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর জাতি গঠনে আমাদের যুব সমাজকে অবশ্যই মাদক থেকে দূরে রাখতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “মাদক চোরাচালানে নারী, শিশু ও কিশোরদের ব্যবহার উদ্বেগজনক। এর ফলে তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে এবং অনেকেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী কমিটি গঠন করে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।”

নতুন ধরণের মাদকের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে সিনথেটিক ও সেমি-সিনথেটিক নতুন মাদক বাজারে আসছে। এগুলো রোধে আইন সংশোধন, নজরদারি ও গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো নতুন মাদকের বিরুদ্ধে সজাগ রয়েছে।”

তিনি জানান, প্রায় ১৮ কোটি মানুষের জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে জনবল রয়েছে মাত্র ২ হাজার ৯৪৩ জন, যার মধ্যে এনফোর্সমেন্টে ১ হাজার ৬২২ জন কাজ করছেন। অধিদপ্তর ৬৪টি জেলা কার্যালয়, ৮টি বিভাগীয় কার্যালয় ও গোয়েন্দা শাখা এবং একটি বিশেষ জোনের মাধ্যমে দেশব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক প্রতিরোধ কমে গেছে, যা উদ্বেগজনক। মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ জোরদার করতে হবে।”

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেন, “মাদক নিয়ন্ত্রণে তিনটি স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করা হয়েছে—সরবরাহ বন্ধ, চাহিদা হ্রাস এবং পুনর্বাসন। দেশের সীমান্ত এলাকায় জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। কারণ এসব মাদক বাইরের দেশ থেকে আসে, আমরা নিজেরাই পয়সা দিয়ে তা কিনে মৃত্যুর পথে যাচ্ছি।”

তিনি জানান, প্রতিটি বিভাগে সরকারিভাবে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট মাদক নিরাময় কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান। 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর