কিশোরগঞ্জের ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনোয়ার হোসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতার কাছে টেন্ডারে পাওয়া কাজের টাকা থেকে ‘জিলাপি’ খাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি ঘিরে একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যা নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
ভাইরাল হওয়া কথোপকথনে ওসি মনোয়ার হোসেনকে বলতে শোনা যায়,
“সেফটি সিকিউরিটি দিলামতো সারাজীবন। তোমরা যে ১৮ লাখ টাকার কাজ করে ১০ লাখ টাকা লাভ করলা, ১০ টাকার জিলাপি কিনে তো পাবলিকরে খাওয়ালা না… আমি হইলে সুদের ওপরে টাকা আইনা আগে জিলাপি খাওয়াইতাম। দোয়াডা হইলো সবার আগে। পরেতো বিল পামু, তাই না?”
এক পর্যায়ে তিনি আরও বলেন,
“ঠিক আছে তাহলে, জিলাপির অপেক্ষায় রইলাম নাকি? না না, এক প্যাঁচ আধা প্যাঁচ দিলেই হইবো। বিভিন্ন পারপাসে হইলে পাবলিক খাইলো আর কী, বোঝ না?”
ভুক্তভোগী ছাত্রনেতা আফজাল হুসাইন শান্ত বলেন,
“আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফসল রক্ষা বাঁধের একটি কাজ টেন্ডারের মাধ্যমে পাই। কাজ শেষ হওয়ার পর থানায় গেলে ওসি জিলাপি খেতে টাকা চাইতেন। তখন রেকর্ড করা সম্ভব হয়নি। পরে ফোনে কথা বলার সময় ওই কথোপকথনের রেকর্ড করি।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন,
“আমি যখন সরকারি নিয়ম মেনে কাজ পেয়েছি, তখন থানার একজন কর্মকর্তা কীভাবে এমন দাবি করতে পারেন? আমার সঙ্গে যদি এমন হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ আরও বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছে কি না, সেটা সহজেই অনুমান করা যায়।”
এই বিষয়ে ওসি মনোয়ার হোসেন বলেন,
“এখন দেখা যাচ্ছে মজাও করা যাবে না। আমি কথাটি মজার ছলে বলেছিলাম। অডিওটি আমি শুনেছি। আমি নিজেও মসজিদে জিলাপি বিতরণ করেছি—সেই প্রেক্ষাপটে হয়তো তাকে বলেছি তুমিও মানুষদের খাওয়াও।”
তবে কথোপকথনের সময় এবং প্রেক্ষাপট সম্পর্কে নিশ্চিত নন বলে জানান। তিনি দাবি করেন, অডিওটি এআই-এর মাধ্যমে এডিট করা হয়ে থাকতে পারে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে বলেন,
“এটি সাধারণ কোনো বিষয় নয়। একজন কর্মকর্তার কাছ থেকে এমন আচরণ কাম্য নয়।”
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসান চৌধুরী বলেন,
“ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআর
মন্তব্য করুন: