জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটারের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিশেষ পদক্ষেপের প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে কমিশন উল্লেখ করেছে, কোনো নির্বাচনে ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে সেই নির্বাচন পুনরায় আয়োজন করা উচিত।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে অন্তর্বর্তী সরকার এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে কাজ করবে।
প্রস্তাবিত সংস্কারসমূহ:
নির্বাচন ব্যবস্থা
১. ইভিএম বাতিল:
- নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিধান পুরোপুরি বাতিল।
২. প্রতিরক্ষা বিভাগের অন্তর্ভুক্তি:
- নির্বাচনের সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় প্রতিরক্ষা বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করা।
৩. পুনর্নির্বাচন:
- কোনো আসনে মোট ভোটারের ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়লে পুনঃনির্বাচন।
৪. না-ভোটের বিধান:
- ভোটারদের মতামত প্রদানের সুযোগ দিতে ‘না-ভোট’ চালু।
- না-ভোট বিজয়ী হলে নির্বাচন বাতিল এবং পুনঃনির্বাচনে আগের প্রার্থীদের অযোগ্য ঘোষণা।
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন
১. প্রার্থীদের যোগ্যতা:
- ঋণখেলাপি ও আদালতের ফেরারি আসামিদের প্রার্থী হতে নিষেধাজ্ঞা।
২. নির্বাচনী ব্যয়ের নজরদারি:
- প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয় ব্যাংক বা আর্থিক প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিচালনা।
- নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাবের নিরীক্ষা এবং অসঙ্গতির জন্য শাস্তির ব্যবস্থা।
নির্বাচনী অভিযোগ ব্যবস্থাপনা
১. নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটি গঠন:
- বিদ্যমান অনুসন্ধান কমিটিকে বিচারিক ক্ষমতা প্রদান।
- কমিটিতে প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অন্তর্ভুক্ত করা।
২. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা:
- অনুসন্ধান ও বিচারিক কার্যক্রম তদারকি কমিটির অধীনে পরিচালিত হলেও বিচারিক সিদ্ধান্তে স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
৩. নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল:
- জেলা পর্যায়ে ‘সংসদীয় নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল’ স্থাপন।
- ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিলের সুযোগ।
বিশেষ প্রস্তাব
- বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন বন্ধ করতে হবে।
- রাজনৈতিক দলগুলোকে যোগ্য ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন দিতে বাধ্য করা।
নির্বাচন কমিশন আশা করছে, এসব সুপারিশ কার্যকর হলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া আরও গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ হবে।
মন্তব্য করুন: