দেশব্যাপী প্রতি মাসে গড়ে ১৮ হাজার ৫০৭টি মোবাইল ফোন চুরি বা ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছে।
এই ঘটনায় প্রায় সবসময়ই সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হলেও, পুলিশ একে উদ্ধার করতে পারে খুবই সামান্য পরিমাণে। উদাহরণস্বরূপ, পুলিশ মাসে গড়ে ৩ হাজার ২০০ মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে পারলেও, হারানো মোবাইল ফোনের সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজারে পৌঁছায়।
গত ১৮ অক্টোবর টাঙ্গাইলের ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট পুলিশ সুপার মো. ইমামুর রশীদও ছিনতাইয়ের শিকার হন, তবে তার মোবাইল ফোনটি পরদিন উদ্ধার করা হয়। অন্যদিকে, রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার সূচনা ধর নামে এক নারী প্রায় এক বছর আগে মোবাইল ফোন হারালেও এখনও তা উদ্ধার হয়নি।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে সারা দেশে মোট ৫৫,৫২২টি মোবাইল ফোন বেহাত হয়েছে। এর মধ্যে জুলাই মাসে ১৮ হাজার ৬৫৩টি হারানো মোবাইলের জিডি হয়েছে, এবং মাত্র ২৯টি মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ উদ্ধার করতে পেরেছে ৫,২৫৬টি মোবাইল ফোন। আগস্টে হারানো জিডি হয়েছিল ১৩,৯৪৪টি, তবে উদ্ধার হয়েছিল মাত্র ১,৭৫৮টি ফোন। সেপ্টেম্বরে হারানো জিডির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২,৮৮৮টি, কিন্তু উদ্ধার হয়েছে মাত্র ২,৭১৭টি ফোন।
পুলিশ সদর দপ্তর সম্প্রতি মোবাইল চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা রোধে সক্রিয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পুলিশের প্রতিটি ইউনিটকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যেন চোরাই মোবাইল বিক্রির স্থান চিহ্নিত করে নিয়মিত অভিযান চালানো হয় এবং ছিনতাইকারী সিন্ডিকেট ভাঙা হয়। তবে, একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, থানা পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে ছিনতাইয়ের মামলা নিতে অনীহা প্রকাশ করে, এবং ভুক্তভোগীদের হারানো জিডি করতে উৎসাহিত করা হয়।
পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) মো. আকরাম হোসেন বলেন, হারানো মোবাইল ফোন উদ্ধারে পুলিশের সব ইউনিটকে আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, চোরাই মোবাইলের বিক্রির স্থান চিহ্নিত না হলে, মোবাইল ফোন চুরি বা ছিনতাই রোধ করা সম্ভব হবে না।
একাধিক সাইবার বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, বেশিরভাগ চুরি হওয়া মোবাইল ফোনের আইএমআই নম্বর বদলে ফেলা হয়, যা উদ্ধার প্রক্রিয়াকে জটিল করে তোলে। অনেক ক্ষেত্রে দামি মোবাইল ফোনগুলি দেশের বাইরে চলে যায়, যা ফেরত আনা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
এভাবে, যখন প্রতি মাসে প্রায় ১৮ হাজার মোবাইল ফোন হারায়, তখন উদ্ধার প্রক্রিয়া আরও দ্রুত ও কার্যকরভাবে পরিচালিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: