[email protected] মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য ১ লাখ টন চাল কিনতে চায় পাকিস্তান

প্রতিদিনের বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০২৫ ৮:৩২ পিএম

বাংলাদেশে সরবরাহের উদ্দেশ্যে স্থানীয় বাজার থেকে ১ লাখ টন

চাল কেনার জন্য একটি আন্তর্জাতিক দরপত্র ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের ট্রেডিং করপোরেশন (টিসিপি)। পাকিস্তানের দৈনিক ‘ডন’–এর প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০ নভেম্বর প্রকাশিত এ দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২৮ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১১টা।

২০১৪–এর পর থেকে দীর্ঘ রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে দুই দেশের সম্পর্ক স্থবির থাকলেও ২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ ও বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়তে শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানের এই নতুন উদ্যোগটি বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।

দরপত্রের শর্ত

টিসিপি জানিয়েছে—

কোম্পানি, পার্টনারশিপ বা একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান—সবাই অংশ নিতে পারবে।

চাল অবশ্যই পাকিস্তানে উৎপাদিত সর্বশেষ মৌসুমের ফসল হতে হবে।

কোনো ধরনের দুর্গন্ধ, ছত্রাক, পোকা, দূষণ বা আগাছার বীজ থাকতে পারবে না।

সর্বনিম্ন ২৫ হাজার টনের প্রস্তাব দেওয়া যাবে; সর্বোচ্চ ১ লাখ টন পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য।

দরপত্র জমার পর প্রস্তাব ২১ কার্যদিবস বৈধ থাকবে।

চুক্তি হলে ৪৫ দিনের মধ্যে চাল জাহাজে তোলার উপযোগী হতে হবে।


কেনা চাল পরবর্তীতে প্যাকেটজাত করে করাচি বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হবে।

বাংলাদেশের দিক থেকে আমদানি

সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ সরকার নিয়মিত আমদানির দরপত্র আহ্বান করছে। সোমবার বাংলাদেশ থেকেও নতুন একটি চাল আমদানির টেন্ডার ঘোষণা করা হয়েছে।

কিছু ব্যবসায়ীর মতে, পাকিস্তানের এ উদ্যোগ মূলত বাংলাদেশে তাদের চাল সরবরাহকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার প্রচেষ্টা। বিশ্লেষকদের ধারণা, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কিছু চাল আমদানিতে ভারতীয় উৎসের চাল মিশ্রিত থাকতে পারে, যা পাকিস্তানকে নতুন সুযোগ দেখাচ্ছে।

দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক

২০২৪ সালের শুরুতে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো সরকারি পর্যায়ে সরাসরি বাণিজ্য শুরু করে, যার প্রথম ধাপ ছিল ৫০ হাজার টন চাল আমদানি।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি)–এর বৈঠকে পাকিস্তান বাংলাদেশকে করাচি পোর্টকে আঞ্চলিক বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হিসেবে ব্যবহার করার প্রস্তাব দেয়।

পাকিস্তানের রপ্তানি পরিস্থিতি

২০২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে পাকিস্তানের চাল রপ্তানি আগের তুলনায় ২৮% কমেছে। এর পেছনে—

ভারতের চাল রপ্তানি পুনরায় চালু হওয়া,

বাসমতি চালের ওপর ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য তুলে নেওয়া,

রপ্তানিতে শূন্য কর নীতি কার্যকর করা—


এসব বিষয়কে কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে।

তবে ভারত বাজারে ফিরে এলেও পাকিস্তানি রপ্তানিকারকরা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার কৌশল গ্রহণ করায় বড় কোনো ঝাঁকুনি তারা অনুভব করেনি।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় বাসমতি চালের ওপর ৫০% শুল্ক আরোপ করায় পাকিস্তানের জন্য মার্কিন বাজারে অতিরিক্ত সুযোগ তৈরি হয়েছে। প্ল্যাটফর্ম ‘ভলজা গ্লোবাল’-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত পাকিস্তানের মোট বাসমতি চাল রপ্তানির ২৪% গেছে যুক্তরাষ্ট্রে।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর