দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ভিয়েতনাম টানা কয়েক দিনের
ভারী বৃষ্টিতে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে। দেশটির মধ্যাঞ্চলে সৃষ্ট এই বন্যায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে, আরও বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) প্রকাশিত বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সপ্তাহান্ত থেকে শুরু হওয়া ক্রমাগত বর্ষণ ও আকস্মিক বন্যা বহু এলাকায় ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানেও চলছে তৎপরতা।
বন্যায় ৫২ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে, আর প্রায় পাঁচ লাখ বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। গত তিন দিনে কিছু এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ দেড় মিটার অতিক্রম করেছে। কয়েকটি অঞ্চলে পানির উচ্চতা ১৯৯৩ সালের ঐতিহাসিক বন্যার ৫.২ মিটার রেকর্ডের কাছাকাছি পৌঁছেছে।
হোই আন, না চাংসহ মধ্যাঞ্চলের উপকূলীয় শহরগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভিয়েতনাম বারবার দুর্যোগের আঘাতে বিপর্যস্ত—কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে ‘কালমেগি’ ও ‘বুয়ালয়’ নামের দুটি টাইফুন আঘাত হানে দেশটিতে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভিয়েতনামের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ২ বিলিয়ন ডলারের মতো।
স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, বন্যার পানিতে ঘরবাড়ির ছাদ পর্যন্ত ডুবে গেছে এবং মানুষ সেই ছাদে আশ্রয় নিয়েছে। অনলাইনে ভাইরাল এক ভিডিওতে লাম ডং প্রদেশের একটি ঝুলন্ত সেতুকে নোঙর ছিঁড়ে ভেসে যেতে দেখা যায়। ভূমিধসে সড়ক ও মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ওই প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে কয়েক লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
না চাং শহরের এক রেস্তোরাঁ মালিক এএফপিকে জানান, তার দোকানে প্রায় এক মিটার পানি ঢুকে পড়েছে। তিনি বলেন, “কীভাবে দোকানের জিনিসপত্র রক্ষা করব, বুঝে উঠতে পারছি না। বৃষ্টি থামছে না, তাই পানি দ্রুত নামবে বলে মনে হচ্ছে না।”
কর্তৃপক্ষ সতর্ক করেছে যে, রবিবার পর্যন্ত মধ্যাঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে, ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: