গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে প্রায় ৪০০ বার ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে বলে জানিয়েছে গাজার আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ।
বলে জানিয়েছে গাজার আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৯ নভেম্বর) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ১০ অক্টোবর ২০২৫ থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ৩৯৩টি লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এসব লঙ্ঘনের মধ্যে রয়েছে বিমান ও কামান হামলা, স্থানীয় জনগণের ওপর আক্রমণ, বাড়িঘর ধ্বংস এবং বিভিন্ন এলাকায় সামরিক অভিযান পরিচালনা।
এ সময়ের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২৭৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ৬৫২ জন আহত হয়েছেন বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া যুদ্ধবিরতির পরও ৩৫ জন গাজাবাসীকে অবৈধভাবে আটক করা হয়েছে।
গাজার প্রশাসন জানায়, ইসরায়েলের এসব কর্মকাণ্ড অঞ্চলে স্থিতিশীলতার সম্ভাবনাকে মারাত্মকভাবে বিপন্ন করছে। তারা মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোকে ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করে যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
গাজাসহ অঞ্চলজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬৯ হাজার ছাড়িয়েছে, আহত হয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজারেরও বেশি মানুষ। কর্তৃপক্ষের দাবি, এখনো অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছেন।
চলতি বছরের শুরুতে আরেকটি যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে ইসরায়েল ২৭ মে থেকে নিজস্ব উদ্যোগে পৃথক খাদ্য সহায়তা বিতরণ শুরু করে। পরবর্তীতে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালালে শতাধিক মানুষ নিহত হয়। এর পরপরই দুর্ভিক্ষ আরও প্রকট হয়ে শিশুসহ বহু মানুষের মৃত্যু ঘটে।
ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের মধ্যে ৬ অক্টোবর মিশর, কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা পুনরায় শুরু হয়। এরপর ৯ অক্টোবর দুই পক্ষ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনায় সম্মত হয় এবং ১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একই সঙ্গে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার অভিযোগে একটি মামলার মুখোমুখি।
এসআর
মন্তব্য করুন: