[email protected] বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

তাইওয়ান নিয়ে তীব্র কূটনৈতিক টানাপোড়েন, চীনকে শান্ত করতে দূত পাঠাল জাপান

প্রতিদিনের বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ১১:৩২ এএম

তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে জাপানের কূটনৈতিক

টানাপোড়েন আরও বাড়তে শুরু করেছে। পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠায় উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে টোকিও একজন শীর্ষ কূটনীতিককে বেইজিং পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগে থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক কিছুটা অস্থির থাকলেও তাইওয়ান নিয়ে সাম্প্রতিক উত্তেজনা সেই দূরত্ব আরও বাড়িয়েছে। জাপানের গণমাধ্যম জানিয়েছে—চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সোমবারই ওই শীর্ষ কূটনীতিক বেইজিং সফরে যাচ্ছেন।

উত্তেজনা মূলত চরমে ওঠে যখন জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি সংসদে দেওয়া বক্তৃতায় বলেন—চীন যদি তাইওয়ানে হামলা চালায়, তবে তা জাপানের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে এবং সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় আসতে পারে। এতদিন জাপানি নেতারা প্রকাশ্যে এমন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতেন, কারণ এতে চীন ক্ষুব্ধ হতে পারে। চীন দীর্ঘদিন ধরে গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড বলে দাবি করে আসছে।

জাপানি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া–ওশেনিয়া ব্যুরোর প্রধান মাসাআকি কানাই চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা লিউ চিনসঙের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানে কানাই স্পষ্ট করবেন যে তাকাইচির বক্তব্য জাপানের নিরাপত্তা নীতিতে কোনো পরিবর্তন নির্দেশ করে না। পাশাপাশি তিনি চীনকে এমন আচরণ পরিহারের আহ্বান জানাবেন যা দুই দেশের সম্পর্ক আরও খারাপ করতে পারে।

যদিও কানাই সত্যিই চীন সফরে গেছেন কিনা, তা জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি।

এর আগে গত শুক্রবার চীন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল—তাইওয়ান ইস্যুতে জাপান যদি সামরিক হস্তক্ষেপ করে, তবে তাকে “বিধ্বংসী পরাজয়” মেনে নিতে হবে। একইসঙ্গে চীনা নাগরিকদের জাপান ভ্রমণে সতর্ক করে দেওয়া হয়, যা জাপানের পর্যটনশিল্পে সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

নিউ তাইপেতে এক সংবাদ সম্মেলনে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই ছিং-তে মন্তব্য করেন—চীন বর্তমানে জাপানের বিরুদ্ধে “বহুমুখী চাপ” প্রয়োগ করছে, যা ইন্দো–প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও পরিস্থিতির ওপর ঘনিষ্ঠ নজর রাখার আহ্বান জানান।

লাই আরও বলেন—চীনকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিপন্ন না করে আন্তর্জাতিক নিয়মানুবর্তিতার পথে ফিরে আসতে হবে। তাইওয়ান সরকার বরাবরই বেইজিংয়ের সার্বভৌমত্বের দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছে।

এদিকে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমও জাপানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করছে। কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র পিপলস ডেইলি এক সম্পাদকীয়তে লিখেছে—তাকাইচির মন্তব্য “অত্যন্ত উসকানিমূলক”, “অদূরদর্শী” এবং আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা বাড়াতে পারে।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর