ভারতের মধ্যপ্রদেশের উচ্চশিক্ষামন্ত্রী ইন্দর সিং পরমার
সমাজ সংস্কারক রাজা রামমোহন রায়কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে নতুন রাজনৈতিক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। তিনি রামমোহনকে ‘ইংরেজদের দালাল’ বলে দাবি করেন এবং বলেন, তাঁর কারণে নাকি ভারতীয় সমাজে বর্ণভিত্তিক বিভাজন আরও গভীর হয়েছিল।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, আগর মালওয়ায় বীরসা মুন্ডা জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পরমার এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ব্রিটিশ আমলে ইংরেজি শিক্ষার মাধ্যমে ধর্মান্তরের একটি “ক্ষতিকর চক্র” চালু হয়েছিল এবং ব্রিটিশরা রামমোহনসহ বহু ভারতীয় চিন্তাবিদকে তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, বীরসা মুন্ডা সেই প্রভাব ভেঙে আদিবাসী সমাজকে রক্ষা করেছিলেন।
পরমারের বক্তব্যে কংগ্রেস তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। দলের মুখপাত্র ভূপেন্দ্র গুপ্ত মন্তব্যগুলোকে “লজ্জাজনক” বলে আখ্যা দিয়ে প্রশ্ন তোলেন—যদি রামমোহন সত্যিই ব্রিটিশদের হয়ে কাজ করতেন, তাহলে সতী প্রথা বিলুপ্তি কি তবে ‘দালালি’ ছিল? তাঁর মতে, যারা নিজেরাই ব্রিটিশদের ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তারাই এখন ইতিহাস নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।
এ ধরনের বিতর্কিত মন্তব্য পরমারের ক্ষেত্রে নতুন নয়। এর আগেও তিনি দাবি করেছিলেন যে ভারতকে ভাস্কো দা গামা নয়, এক বণিক ‘চন্দন’ আবিষ্কার করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে দেওয়া সেই বক্তব্য নিয়েও ব্যাপক সমালোচনা হয়।
এ ছাড়া উচ্চশিক্ষা দপ্তরের নির্দেশনায় কলেজ লাইব্রেরিতে ৮৮টি নির্দিষ্ট বই যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়; কারণ এসব বইয়ের বহু লেখক রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে। পরমার স্কুল শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালেও দাবি করেছিলেন, দেশে স্বাধীনতার আগে ও পরে ইচ্ছাকৃতভাবে “ভুল ইতিহাস” পড়ানো হয়েছে এবং ইতিহাস বিকৃতির জন্য নাকি নির্দিষ্ট “এজেন্ট” নিয়োগ করা হয়েছিল।
এসআর
মন্তব্য করুন: