ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের হেবরনে মুসলিমদের জন্য ইব্রাহিমি মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
একই সঙ্গে শহরের পুরোনো এলাকায় ফিলিস্তিনিদের ওপর কারফিউ জারি করা হয়েছে।
অবৈধ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের ধর্মীয় উৎসব নির্বিঘ্নে পালনের সুযোগ করে দিতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার সকাল থেকে হেবরনের পুরোনো শহরজুড়ে কঠোর কারফিউ জারি রয়েছে। স্থানীয় কর্মী ও হেবরন ডিফেন্স কমিটির সদস্য আরেফ জাবের জানান, সামরিক বাহিনী পুরোনো শহরে প্রবেশের সব চেকপয়েন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে অনেক ফিলিস্তিনি নিজ ঘরেও ফিরতে পারেননি; বাধ্য হয়ে স্বজনদের বাড়িতে রাত কাটাতে হয়েছে।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার রাত ও শনিবার সকালে শত শত অবৈধ বসতকারী ভারী নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে পুরোনো শহরে প্রবেশ করে রাস্তায় “উসকানিমূলক” শোভাযাত্রা করেছে। জাবেরের ভাষ্যে, এই কারফিউ মূলত ইব্রাহিমি মসজিদের বাকি অংশ সম্পূর্ণ দখলে নিয়ে এটিকে সিনাগগে রূপান্তরের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ।
ফিলিস্তিনি ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৫ সালের শুরু থেকেই ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ মসজিদের সুক গেট ও পূর্ব দিকের প্রধান গেট বন্ধ করে রেখেছে।
এমনকি মসজিদের জানালাও ঢেকে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ইব্রাহিমি মসজিদ পুরোপুরি ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে; যেখানে ৪০০-এর মতো অবৈধ বসতকারী থাকে এবং তাদের নিরাপত্তায় মোতায়েন রয়েছে প্রায় ১,৫০০ ইসরায়েলি সেনা।
১৯৯৪ সালে এক ইসরায়েলি বসতকারীর গুলিতে ২৯ ফিলিস্তিনি মুসল্লি নিহত হওয়ার পর মসজিদটি দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়—৬৩ শতাংশ ইহুদিদের উপাসনার জন্য এবং ৩৭ শতাংশ মুসলিমদের জন্য। ইহুদিদের বরাদ্দ অংশে আজান দেওয়ার ঘরটিও অন্তর্ভুক্ত।
ইসরায়েলের একতরফা ব্যবস্থাপনায় বছরে ১০ দিন ইহুদি ধর্মীয় উৎসবে মসজিদটি পুরোপুরি মুসলিমদের জন্য বন্ধ থাকে; আবার ইসলামি উৎসবের ১০ দিন ইহুদিদের প্রবেশও নিষিদ্ধ থাকে।
তবে ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মুসলিমদের নির্ধারিত পূর্ণ প্রবেশাধিকার আর কার্যকর রাখা হয়নি।
এসআর
মন্তব্য করুন: