ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে মঙ্গলবার রাতে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।
এ সময় ১৫০ থেকে ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। এতে দুজন সামান্য আহত হয়েছে, বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করে ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম।
এ সময় ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষের আঘাতে অধিকৃত পশ্চিম তীরে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন জেরিকোর গভর্নর হুসেইন হামায়েল।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলজুড়ে সাইরেন বেজে উঠলে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটতে থাকে দেশটির নাগরিকরা। হামলার পর পর আকাশপথ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এ ছাড়া প্রতিবেশী ইরাক, লেবানন ও জর্দানও তাদের আকাশপথ বন্ধ করে দেয়।
বার্তা সংস্থা এএফপির সাংবাদিক জানিয়েছেন, পূর্ব দিক থেকে বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় জর্দানের রাজধানী আম্মানের আকাশে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ বলেছে, লেবাননে ইরানসমর্থিত যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি অভিযানের জবাবে এই হামলা চালিয়েছে তেহরান।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, মঙ্গলবার রাতে ইরান থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।
প্রায় ১৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়।
ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোর বলেছে, ইসরায়েলি বোমা হামলায় লেবাননে হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরাল্লাহ এবং ইরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে এই হামলা করা হয়েছে।
এদিকে হোয়াইট হাউস বলেছে, মার্কিন সামরিক বাহিনীকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষায় সহায়তার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর আগে ইরানের তরফ থেকে হামলার বিষয়ে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছিল ওয়াশিংটন।
হামলার প্রায় এক ঘণ্টা পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ঝুঁকি কেটে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
সেনাবাহিনী জানায়, বিপুলসংখ্যক ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে। নাগরিকরা নিরাপদ স্থান ত্যাগ করতে পারবে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফের মুখপাত্র দানিয়েল হাগারি বলেছেন, এই হামলার পরিণতি ভোগ করতে হবে (ইরানকে)।
এদিকে ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালালে হামলার তীব্রতা বাড়ানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। দেশটির ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর বলেছে, যদি জায়নবাদী শাসকরা ইরানি হামলার প্রতিক্রিয়া দেখায়, তাহলে তারা বিধ্বংসী হামলার মুখোমুখি হবে।
অন্যদিকে ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রশংসা করে গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাস বলেছে, হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া হত্যার প্রতিশোধ নিতে এই হামলা চালানো হয়েছে।
সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে তেল আবিবের প্রাণঘাতী হামলার জবাবে গত এপ্রিলে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছিল তেহরান। এর পাঁচ মাস পর আবারও ইসরায়েলে হামলা চালাল দেশটি।
এদিকে ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে বন্দুকধারীর গুলিতে আটজন নিহত এবং আটজন আহত হয়েছে।
গতকাল দেশটির জরুরি সেবা (এনডিএ) এই তথ্য জানিয়েছে। ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। দুজন হামলাকারীকে নিরস্ত্র করা হয়েছে। এটি সন্ত্রাসী হামলা বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র : এএফপি, বিবিসি, সিএনএন
এসআর
মন্তব্য করুন: