মার্কিন রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী স্পিকার ও দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে কংগ্রেসে নেতৃত্ব দেওয়া ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট নেতা ন্যান্সি পেলোসি অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় ৮৫ বছর বয়সী পেলোসি জানান, ২০২৭ সালের জানুয়ারিতে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি পুনর্নির্বাচনে অংশ নেবেন না। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পেলোসি বলেন, “আমরা ইতিহাস গড়েছি, অগ্রগতি অর্জন করেছি। গণতন্ত্র রক্ষার এই পথচলায় আমাদের এগিয়ে যেতে হবে এবং আমেরিকার আদর্শ রক্ষায় লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে।”
সান ফ্রান্সিসকোর জনগণের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, “আমার প্রিয় শহর সান ফ্রান্সিসকো—তোমরা তোমাদের শক্তি জানো, আর সেটিই তোমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ।”
১৯৮৭ সালে প্রথমবার কংগ্রেসে নির্বাচিত হয়ে পেলোসি দ্রুতই ডেমোক্র্যাট দলের শীর্ষ পর্যায়ে উঠে আসেন। ২০০৭ সালে তিনি মার্কিন ইতিহাসে প্রথম নারী স্পিকার নির্বাচিত হন, দায়িত্ব পালন করেন ২০১১ সাল পর্যন্ত। পরে ২০১৯ সালে আবারও স্পিকার পদে ফিরে এসে ২০২৩ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, স্পিকার পদটি কংগ্রেসের একমাত্র সংবিধানিকভাবে নির্ধারিত পদ এবং রাষ্ট্রপতির উত্তরাধিকার তালিকায় ভাইস প্রেসিডেন্টের পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে পেলোসি ছিলেন একাধারে সংস্কারক, কৌশলী ও দৃঢ় নেতৃত্বের প্রতীক।
সবচেয়ে আলোচিত মুহূর্ত ছিল ২০২০ সালে স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণের সময় তার হাতে থাকা ট্রাম্পের ভাষণপত্র ছিঁড়ে ফেলার দৃশ্যটি, যা বিশ্বজুড়ে আলোচিত হয়।
এছাড়া তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দুইবার ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া চালান—
প্রথমবার ২০১৯ সালে ইউক্রেন কেলেঙ্কারির ঘটনায়,
দ্বিতীয়বার ২০২১ সালে ক্যাপিটল হিল দাঙ্গায় উসকানির অভিযোগে।
দুই ক্ষেত্রেই রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সিনেট ট্রাম্পকে খালাস দেয়।
পেলোসির অবসরের ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ট্রাম্পও। তিনি বলেন, “আমি খুশি যে সে অবসর নিচ্ছে। সে একজন খারাপ নারী ছিল, আর তার অবসর নেওয়া দেশের জন্য বড় উপকার।”
ন্যান্সি পেলোসির বিদায়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস এক সাহসী, দূরদর্শী ও প্রভাবশালী নেতার যুগের সমাপ্তি প্রত্যক্ষ করতে যাচ্ছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: