যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী হাউস স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব
পালন করা ন্যান্সি পেলোসি আনুষ্ঠানিকভাবে কংগ্রেস থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। এর ফলে মার্কিন রাজনীতির এক যুগান্তকারী অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল।
৪০ বছরেরও বেশি রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের পর তিনি ২০২৭ সালের জানুয়ারিতে দায়িত্ব ছাড়বেন। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় এক ভিডিও বার্তায় ৮৫ বছর বয়সী ক্যালিফোর্নিয়ার এই ডেমোক্র্যাট নেতা জানান, মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি পুনর্নির্বাচনে অংশ নেবেন না। পেলোসি বলেন,
“আমরা ইতিহাস তৈরি করেছি এবং অগ্রগতি এনেছি। এখন আমাদের গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে সেই পথ অব্যাহত রাখতে হবে— যে আদর্শে আমেরিকা গর্ব করে, তা রক্ষা করতে হবে।”
নিজ শহর সান ফ্রান্সিসকো-র প্রতি তিনি বলেন, “আমি যে শহরটিকে ভালোবাসি, নিজের শক্তি চেনো।”
১৯৮৭ সালে ৪৭ বছর বয়সে সান ফ্রান্সিসকো থেকে প্রথমবার কংগ্রেসে নির্বাচিত হন পেলোসি। দ্রুত দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বে উঠে আসেন। ২০০৭ সালে হাউস স্পিকার নির্বাচিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে এই পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০১১ সালে দলের হেরফেরের কারণে পদ ছাড়তে হয়, কিন্তু ২০১৯ সালে আবার স্পিকারের দায়িত্ব পান এবং ২০২৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট পদে উত্তরাধিকারের তালিকায় ভাইস প্রেসিডেন্টের পর হাউস স্পিকারই অবস্থান করে। এই অবস্থান থেকে পেলোসি একাধিক মার্কিন প্রেসিডেন্টের নীতি বাস্তবায়ন এবং প্রতিহত করার দায়িত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
বারাক ওবামার প্রশাসনে স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার বিল পাশ করাতে এবং জো বাইডেনের আমলে অবকাঠামো ও জলবায়ু সংক্রান্ত বিল এগিয়ে নিতে তার নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল সংঘাতপূর্ণ। ট্রাম্পের স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণের কপি ছিঁড়ে ফেলার ঘটনা বিশ্বজুড়ে আলোচিত হয়।
পেলোসি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দুই দফায় অভিশংসন প্রক্রিয়া পরিচালনা করেছেন। প্রথমটি ২০১৯ সালে ইউক্রেন ইস্যুতে এবং দ্বিতীয়টি ২০২১ সালে ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হামলার ঘটনায়। তবে সিনেটে রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে ট্রাম্প দুই ক্ষেত্রেই রেহাই পান।
এসআর
মন্তব্য করুন: