[email protected] বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫
২১ কার্তিক ১৪৩২

যুদ্ধবিরতি চললেও ত্রাণ প্রবেশে বাধা, গাজায় ক্ষুধায় কাতর ফিলিস্তিনিরা

প্রতিদিনের বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ৫ নভেম্বর ২০২৫ ৯:০৯ এএম

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও ত্রাণসহায়তা প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় সেখানে তীব্র খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। ফলে ক্ষুধা ও চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষ।

সীমিত সীমান্ত খোলা থাকায় গাজায় ত্রাণ সরবরাহে বড় বাধা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বৈশ্বিক সংস্থাটি সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফিলিস্তিনিদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বুধবার (৫ নভেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠাতে তৎপর জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থাগুলো, তবে ইসরায়েলের অব্যাহত বিধিনিষেধের কারণে ত্রাণ সরবরাহে বড় বাধা তৈরি হয়েছে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।

সংস্থাটির মুখপাত্র আবির ইতেফা জানান, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে গত মাসে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর ত্রাণ সরবরাহ কিছুটা বাড়লেও সীমিতভাবে সীমান্ত খোলা থাকায় ত্রাণের পরিমাণ এখনো খুবই কম।

তিনি বলেন, “আমাদের পূর্ণ প্রবেশাধিকার দরকার। দ্রুতগতিতে ত্রাণ পৌঁছানো জরুরি। আমরা সময়ের সঙ্গে লড়ছি। শীত আসছে, অথচ মানুষ এখনো ক্ষুধার্ত।”

ডব্লিউএফপি জানায়, তারা গাজাজুড়ে ৪৪টি স্থানে খাদ্য বিতরণ কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে। তবে সংস্থাটির মতে, গাজায় প্রবেশ করা খাদ্যের পরিমাণ এখনো যথেষ্ট নয়, বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে পৌঁছানো অত্যন্ত কঠিন।

ইতেফা আরও জানান, “উত্তর গাজার প্রবেশপথ এখনো বন্ধ। ফলে ত্রাণ কাফেলাগুলোকে দক্ষিণ দিকের দীর্ঘ ও ঝুঁকিপূর্ণ পথ ব্যবহার করতে হচ্ছে। কার্যকর ত্রাণ বিতরণের জন্য সব সীমান্ত পারাপার পয়েন্ট খুলে দেওয়া জরুরি, বিশেষ করে উত্তর দিকেরগুলো।”

যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলি সেনারা ‘ইয়েলো লাইন’ থেকে সরে যাওয়ার পর বহু ফিলিস্তিনি উত্তর গাজার বাড়িতে ফিরেছেন, কিন্তু অধিকাংশই দেখেছেন তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। অনেকে এখনো তাঁবু ও অস্থায়ী আশ্রয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থা ইসরায়েলকে আরও ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। শীতের কঠিন সময় ঘনিয়ে আসায় তাদের উদ্বেগও বেড়েছে।

গাজার সরকারি তথ্য অফিসের তথ্যানুসারে, ১০ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ৩ হাজার ২০৩টি ত্রাণ ও বাণিজ্যিক ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে, যা দৈনিক গড়ে ১৪৫টি ট্রাক। কিন্তু যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী দৈনিক ৬০০টি ট্রাক প্রবেশ করার কথা ছিল।

এদিকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে। মঙ্গলবার গাজা সিটির তুফাহ এলাকায় কোয়াডকপ্টার হামলায় একজন নিহত ও একজন আহত হন। উত্তর গাজার জাবালিয়াতেও সেনাদের গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২৪০ জন নিহত ও ৬০৭ জন আহত হয়েছেন।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর