বিশ্ববাজারে কমেছে স্বর্ণের দাম

বিশ্ববাজারে কমেছে স্বর্ণের দাম।

আউন্সপ্রতি মূল্য নেমে এসেছে ৪ হাজার ডলারের কাছাকাছি। ডিসেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে আরেক দফা সুদের হার কমানো নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় ডলার শক্তিশালী হয়েছে, যা স্বর্ণের দামে চাপ সৃষ্টি করেছে। তবে টানা তৃতীয় মাসের মতো স্বর্ণ এখনো সামগ্রিকভাবে লাভের ধারায় রয়েছে। খবর রয়টার্স।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম ০.৪ শতাংশ কমে দাঁড়ায় আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৯ দশমিক ২৪ ডলার।

রয়টার্স জানায়, অক্টোবরজুড়ে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ৪ শতাংশ। অন্যদিকে, ডিসেম্বর ডেলিভারির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের স্বর্ণ ফিউচার সামান্য ০.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ২০ দশমিক ৮০ ডলারে লেনদেন হয়।

ডলার সূচক বর্তমানে তিন মাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। এর ফলে ডলারে নির্ধারিত স্বর্ণের দাম অন্যান্য মুদ্রাধারীদের জন্য আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে।

অ্যাকটিভট্রেডসের বিশ্লেষক রিকার্ডো ইভানজেলিস্তা বলেন,

“ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের কড়া মন্তব্যের পর ডলার শক্তিশালী হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে স্বর্ণবাজারে।”

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ চলতি বছরে দ্বিতীয়বারের মতো সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৩.৭৫ থেকে ৪ শতাংশের মধ্যে নির্ধারণ করে। তবে চেয়ারম্যান পাওয়েল জানিয়েছেন, ডিসেম্বর মাসে আরও একটি হার কমানোর বিষয়ে ফেড কর্মকর্তাদের মধ্যে এখনো ঐকমত্য গড়ে ওঠেনি।

সিএমই গ্রুপের ফেডওয়াচ টুল অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসে আরও একটি হার কমানোর সম্ভাবনা বর্তমানে ৬৭ শতাংশ, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৯১ শতাংশের বেশি।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সাম্প্রতিক বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতি দেখা দেওয়ায় স্বর্ণের ‘নিরাপদ বিনিয়োগ’ হিসেবে চাহিদা কিছুটা কমেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, চীনের ওপর শুল্ক আংশিক কমাতে যুক্তরাষ্ট্র রাজি হয়েছে। এর বিনিময়ে চীন অবৈধ ফেন্টানিল বাণিজ্য দমন, মার্কিন সয়াবিন আমদানি পুনরায় শুরু এবং বিরল ধাতুর রপ্তানি অব্যাহত রাখবে।

তবে বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা এবং যুক্তরাষ্ট্র-চীনের টানাপোড়েনের কারণে দীর্ঘমেয়াদে স্বর্ণের বাজার এখনো ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে।

অন্যদিকে অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর বাজারেও কিছুটা অস্থিরতা দেখা গেছে।

• স্পট সিলভার বেড়েছে ০.২ শতাংশ — আউন্সপ্রতি ৪৯ দশমিক ০২ ডলার,
• প্লাটিনাম কমেছে ০.৯ শতাংশ — আউন্সপ্রতি ১,৫৯৬ দশমিক ৬০ ডলার,
• প্যালাডিয়াম বেড়েছে ১.১ শতাংশ — আউন্সপ্রতি ১,৪৬০ দশমিক ৯৫ ডলারে লেনদেন হয়।

দেশীয় বাজারে স্বর্ণের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্তমানে

• ২২ ক্যারেট স্বর্ণের ভরি বিক্রি হচ্ছে ২ লাখ ২ হাজার ৯৬ টাকায়,
• ২১ ক্যারেটের ভরি ১ লাখ ৯০ হাজার ৯৯৮ টাকা,
• ১৮ ক্যারেটের ভরি ১ লাখ ৬৩ হাজার ৭১৬ টাকা,
• আর সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের ভরি ১ লাখ ৩৬ হাজার ১৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।