বিশ্ববাজারে টানা বৃদ্ধি এবং আকস্মিক দরপতনের পর আবারও দোলাচলে স্বর্ণের দাম।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) টানা বাড়ার ধারা থেমে স্বর্ণের দাম এক দিনে ৫ শতাংশের বেশি কমে যায়, আর বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে কিছুটা বেড়ে আবার দিনের শেষে কমে আসে—ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার স্পট গোল্ডের দাম শুরুতে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্সে ৪,১৩৪ দশমিক ৩৭ ডলারে দাঁড়ায়। একই সময়ে ডিসেম্বরের জন্য ইউএস গোল্ড ফিউচার প্রায় ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি আউন্সে ৪,১৪৭ দশমিক ১০ ডলারে লেনদেন হয়।
তবে দিনের শেষভাগে বাজারের গতি আবার বদলায়। সর্বশেষ হিসাবে, স্পট গোল্ডের দাম আগের দিনের তুলনায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ কমে প্রতি আউন্সে ৪,০৬৭ ডলারে নেমে আসে—যা গত দুই সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন।
রয়টার্স জানায়, সাম্প্রতিক এই ওঠানামার পেছনে মূলত দুইটি কারণ কাজ করছে—
১. মার্কিন ডলারের মান কিছুটা কমেছে, ফলে সোনা কেনার প্রবণতা বেড়েছে।
২. মঙ্গলবারের বড় দরপতনের পর অনেক বিনিয়োগকারী ‘কম দামে কেনার সুযোগ’ হিসেবে বাজারে ফিরেছেন।
সপ্তাহের শুরুতে স্বর্ণের দাম ৫ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছিল, যা ২০২০ সালের আগস্টের পর সবচেয়ে বড় দৈনিক পতন। তখন সোনার দাম নেমে গিয়েছিল প্রতি আউন্সে ৪,০০৩ দশমিক ৩৯ ডলারে।
বাজার বিশ্লেষক রোনা ও’কনেল বলেন, “এই পতন আসলে একটি প্রয়োজনীয় সংশোধন। বাজার অতিমাত্রায় ক্রয়চাপের মুখে ছিল। এখন বিনিয়োগকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের সুদের হার কমার সম্ভাবনা ও বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার কারণে নতুন করে সোনা কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।”
অন্যদিকে, বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি এখন শুক্রবার প্রকাশিত হতে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) প্রতিবেদনের দিকে, যা ফেডারেল রিজার্ভের পরবর্তী সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে।
স্বর্ণের পাশাপাশি রুপার দামেও দেখা গেছে সামান্য উত্থান। বুধবার রুপার দাম ০.২ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্সে ৪৮ দশমিক ৮৪ ডলারে দাঁড়ায়। এর আগে মঙ্গলবার ৭ দশমিক ১ শতাংশ দরপতন হয়েছিল রুপার বাজারে।
বিশ্লেষকদের মতে, বৈশ্বিক অর্থনীতির অনিশ্চয়তা, ডলারের মান ও সুদের হার সংক্রান্ত প্রত্যাশা—এই তিনটি বিষয়ই আগামী সপ্তাহগুলোতে স্বর্ণবাজারের দিক নির্ধারণ করবে।
এসআর
মন্তব্য করুন: