বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষা, গুম–খুনের বিচার নিশ্চিত করা এবং আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে থাকা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চিঠি দিয়েছে ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা।
রোববার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)-এর ওয়েবসাইটে চিঠিটি প্রকাশ করা হয়।
চিঠিতে স্বাক্ষর করেছে—
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (HRW), কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (CPJ), সিভিকাস, ফোরটিফাই রাইটস, রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস, এবং টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট।
চিঠিতে বলা হয়, জুলাই বিপ্লব ও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার মৌলিক স্বাধীনতা পুনর্বহাল এবং গুমসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্তে পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে মানবাধিকার রক্ষার পরিসর আরও বাড়ানো এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জবাবদিহি নিশ্চিত করা জরুরি বলে উল্লেখ করা হয়।
চিঠিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়,
“নিরাপত্তা খাতে এখনো কার্যকর সংস্কার হয়নি এবং অতীতের গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনায় দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন।”
১️⃣ গুম, খুন ও নির্যাতনের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে জবাবদিহি নিশ্চিত করা
২️⃣ র্যাব বিলুপ্ত ও ডিজিএফআইয়ের ক্ষমতা সীমিত করে নিরাপত্তা খাত সংস্কার
৩️⃣ গুমবিরোধী আইন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে প্রণয়ন ও তদন্ত কমিশনকে সহায়তা
৪️⃣ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (এনএইচআরসি) স্বাধীনতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করা
৫️⃣ সাইবার নিরাপত্তা আইন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিরোধী বিধান বাতিল
৬️⃣ সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি বন্ধ করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা
৭️⃣ আওয়ামী লীগের ওপর সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
৮️⃣ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন রোধ ও তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা
চিঠিতে বলা হয়,
“সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা প্রকৃত বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে অন্তরায় হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জনগণের অংশগ্রহণ সীমিত করবে।”
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছে, বর্তমানে মিয়ানমারের কোনো অংশই “স্বেচ্ছায়, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য নিরাপদ নয়।”
এছাড়া, বাংলাদেশের উচিত আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের (ICC) তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এসআর
মন্তব্য করুন: