[email protected] শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫
৩ কার্তিক ১৪৩২

বাংলাদেশে গুম ও নির্যাতনের বিচার: জাতিসংঘের প্রশংসা ও আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০২৫ ১২:৩৪ পিএম

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনকে “জবাবদিহির পথে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি” বলে আখ্যা দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।

তিনি বলেন, “এটি ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।”

গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় অভিযোগ গঠন করে। অভিযোগগুলো এসেছে টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেল ও জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল থেকে। এসব মামলায় সাবেক ও বর্তমান সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সের (ডিজিএফআই) সাবেক মহাপরিচালক এবং র‍্যাবের সাবেক কর্মকর্তারাও।

এরপর শনিবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জানায়, তারা এক ডজনেরও বেশি অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে আটক করেছে। এ প্রসঙ্গে ভলকার তুর্ক বলেন, “অভিযুক্তদের দ্রুত স্বাধীন ও যোগ্য বেসামরিক আদালতে হাজির করা প্রয়োজন, যাতে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত বিচার নিশ্চিত হয়।”

জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক আইনের নীতিমালা অনুযায়ী সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা জরুরি। বিশেষ করে এই সংবেদনশীল মামলাগুলোতে ভুক্তভোগী ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেতে হবে।”

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশ গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে সংশোধন আনে। এর ফলে দেশে প্রথমবারের মতো গুমকে আইনত স্বীকৃত অপরাধ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

তুর্ক আরও বলেন, “পূর্ববর্তী সরকারের সময় থেকে ঝুলে থাকা বহু অভিযোগ দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন। যাদের অন্যায়ভাবে আটক রাখা হয়েছে—বিশেষ করে গুম থেকে ফিরে আসা ব্যক্তি, সাংবাদিক, ও সাবেক সরকারের সমর্থকদের—অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।”

তিনি আরও সতর্ক করেন, “অনেকের বিরুদ্ধে এখনো কঠোর সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় অযৌক্তিক মামলা চলছে। এসব মামলা পুনর্বিবেচনা করা জরুরি।”

জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, “যে অপরাধই হোক না কেন, যেন কোনও মামলাতেই মৃত্যুদণ্ডের পথ বেছে না নেওয়া হয়।”

শেষে ভলকার তুর্ক বলেন, “শুধু বিচার নয়, সত্য উদঘাটন, ক্ষতিপূরণ, নিরাময় ও ন্যায়ভিত্তিক প্রক্রিয়া শুরু করাই বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার পথ। এতে অতীতের মানবাধিকার লঙ্ঘনের পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে।”

তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর