অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস। সংঘাত বন্ধের পাশাপাশি বন্দিবিনিময় চুক্তিও হয়েছে দুপক্ষের মধ্যে।
ইতোমধ্যে ইসরায়েল তাদের সেনা সদস্যদের গাজার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রত্যাহার শুরু করেছে।
এ অবস্থায় দীর্ঘদিন বাস্তুচ্যুত থাকা হাজারো ফিলিস্তিনি নিজ ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। কেউ ফিরছেন পদব্রজে, কেউ গাড়িতে বা ট্রাকে চড়ে। টানা দুই বছরের ভয়াবহ যুদ্ধ ও ধ্বংসযজ্ঞের পর বাড়ির পথে ফিরতে পেরে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন।
খান ইউনিস থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরপরই হাজারো বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি দলবদ্ধভাবে গাজা সিটির দিকে যাত্রা করে। প্রথমদিকে কিছুটা ভীতি থাকলেও তারা দলে দলে রওনা দেন। মধ্য গাজার অপেক্ষাকৃত নিরাপদ অঞ্চল থেকে শত শত মানুষ হাঁটতে হাঁটতে গাজা অভিমুখে যাত্রা করছেন। রাস্তাজুড়ে কেউ ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি দিচ্ছেন, কেউ আনন্দে শিস বাজাচ্ছেন।
বাস্তুচ্যুত গাজার বাসিন্দা ইব্রাহিম আল-হেলু (৪০) বলেন,
“আমি আবেগাপ্লুত হলেও সতর্ক ছিলাম। আগে পরিস্থিতি যাচাই করছিলাম, কারণ গুলিবর্ষণের আশঙ্কা ছিল। এখন রাস্তায় কোনো বাধা নেই, তাই সবাই মিলে বাড়ি ফিরছি।”
বুধবার (৮ অক্টোবর) মিশরের শারম আল-শেখে অনুষ্ঠিত আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, মিশর ও তুরস্কের উপস্থিতিতে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ইসরায়েল ও হামাস। এ আলোচনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ছিল মূল আলোচ্য।
ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন,
“আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ইসরায়েল ও হামাস—দুপক্ষই সই করেছে। খুব শিগগির সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েল সমঝোতা অনুযায়ী সেনা প্রত্যাহার করবে। এটি টেকসই শান্তির পথে একটি বড় পদক্ষেপ।”
হামাসের পক্ষ থেকেও যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। সংগঠনটির আলোচক দলের প্রধান খলিল আল-হায়া জানান,
“চুক্তিটি গাজার সংঘাতের অবসান ঘটাবে। ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার, ত্রাণ প্রবেশ ও বন্দিবিনিময়ের পথ সুগম হবে। মধ্যস্থতাকারীরা নিশ্চয়তা দিয়েছেন, যুদ্ধ এখন শেষ।”
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত সামরিক অভিযান চলছে। এ সময় দুই ধাপে অল্প সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতি হলেও প্রায় পুরো সময় জুড়েই চলেছে হামলা। এতে এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার আহত হয়েছেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: