ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা।
এর ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে যাচ্ছে।
শুক্রবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, “ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি সংক্রান্ত ফ্রেমওয়ার্কটি সরকার অনুমোদন করেছে।” যদিও তিনি সরাসরি যুদ্ধবিরতির কথা উল্লেখ করেননি, ইসরায়েলি সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভার অনুমোদনের ফলে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে আর কোনো বাধা নেই।
মুখপাত্রের ভাষায়, “আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হবে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় আটক সব জীবিত ও মৃত ইসরায়েলি জিম্মিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।”
গত ২৯ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে এক ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নতুন এই পরিকল্পনা উন্মোচন করেন। এ সময় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু উপস্থিত ছিলেন। ট্রাম্প জানান, তার প্রস্তাব ইসরায়েল, হামাস, মিসর ও কাতারের কাছে পাঠানো হয়েছে—যেখানে হামাস ছাড়া বাকি পক্ষগুলো শুরুতেই সম্মতি জানায়।
পরে ৩ অক্টোবর হামাসও প্রাথমিক সম্মতি জানায়। এরপর ৬ অক্টোবর মিসরের শারম আল শেখ শহরে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, হামাস, মিসর ও কাতারের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক হয়।
দুই দিনের আলোচনার পর ৮ অক্টোবর রাতে ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধিরা ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রাথমিক পর্যায়ে সম্মতিসূচক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
ট্রাম্প পরদিন ৯ অক্টোবর এক্সে উভয় পক্ষের স্বাক্ষরের বিষয়টি প্রকাশ করেন। এর ২৪ ঘণ্টা পর ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা আনুষ্ঠানিকভাবে পরিকল্পনাটি অনুমোদন করে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা ও ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। এর পরদিনই গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।
প্রায় এক বছরের এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েলের হিসাবে, গাজায় এখনও ৪৮ জন জিম্মি রয়েছেন, যাদের মধ্যে অন্তত ২০ জন জীবিত।
এসআর
মন্তব্য করুন: