২০২৫ সালের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন হাঙ্গেরিয়ান লেখক লাসজলো ক্রাসনাহোরকাই।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) স্থানীয় সময় দুপুরে রয়েল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে।
আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আকর্ষণীয় ও দূরদর্শী লেখনীর জন্য এবং আধুনিক সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ক্রাসনাহোরকাইকে এ বছরের নোবেল সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।
সুইডিশ একাডেমি এক বিবৃতিতে জানায়,
“লাসজলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের রচনাবলি বৈশ্বিক ভয়াবহতার মধ্যেও শিল্পের শক্তিকে পুনর্নির্মাণ করেছে। তিনি মধ্য ইউরোপীয় সাহিত্যের এক মহাকাব্যিক কণ্ঠস্বর, যার কাজ কাফকা ও থমাস বার্নহার্ডের মতো লেখকদের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা বহন করছে।”
লাসজলো ক্রাসনাহোরকাই জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫৪ সালের ৫ জানুয়ারি হাঙ্গেরির গিউলায়। দীর্ঘ সাহিত্যজীবনে তিনি হাঙ্গেরি, ইংরেজি, ফরাসি, জার্মান ও সুইডিশসহ একাধিক ভাষায় সাহিত্য রচনা করেছেন। গভীর দার্শনিক ভাবনা, বিমূর্ত গদ্য ও অস্তিত্ববাদী বয়ানে তার লেখনী বিশ্বজুড়ে সমাদৃত।
গত বছর দক্ষিণ কোরিয়ার লেখিকা হান কাং সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জিতেছিলেন। ট্রমা মোকাবিলা ও মানব জীবনের ভঙ্গুরতা কাব্যিক গদ্যে প্রকাশের জন্য তিনি পুরস্কৃত হন। হান কাং ছিলেন প্রথম দক্ষিণ কোরিয়ান ও ১৮তম নারী নোবেল সাহিত্য বিজয়ী।
রসায়নে নোবেল: তিন বিজ্ঞানীর যৌথ সাফল্য
রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন সুসুমু কিতাগাওয়া, রিচার্ড রবসন ও ওমার এম. ইয়াগি।
‘মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক’ (Metal-Organic Frameworks) উদ্ভাবনের জন্য তাদের এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে রয়েল সুইডিশ একাডেমি তাদের নাম ঘোষণা করে।
নোবেল কমিটির ব্যাখ্যানুযায়ী, এই বিজ্ঞানীরা এমন আণবিক কাঠামো (MOFs) তৈরি করেছেন, যেগুলোর ভেতর দিয়ে গ্যাস ও রাসায়নিক পদার্থ সহজে চলাচল করতে পারে। এসব কাঠামোর মাধ্যমে বায়ু থেকে পানি সংগ্রহ, কার্বন ডাইঅক্সাইড আটকানো, বিষাক্ত গ্যাস শোষণ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া ত্বরান্বিত করা সম্ভব হচ্ছে।
এ কাঠামোয় ধাতব আয়নগুলো কোনার খুঁটির মতো কাজ করে, আর সেগুলোকে যুক্ত করে দীর্ঘ কার্বনভিত্তিক অণু দিয়ে। ফলে গঠিত হয় গহ্বরযুক্ত স্ফটিক পদার্থ, যা আধুনিক রসায়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল: যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিজ্ঞানীর কীর্তি
এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিজ্ঞানী—
জন ক্লার্ক, মিশেল এইচ. দেবোরে ও জন এম. মার্টিনিস।
তারা কোয়ান্টাম মেকানিক্সে যুগান্তকারী গবেষণা ও উদ্ভাবনী কাজের জন্য এ স্বীকৃতি পেয়েছেন।
নোবেল পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
সুইডিশ উদ্ভাবক আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছানুসারে ১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার প্রদান শুরু হয়।
বর্তমানে এটি বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক পুরস্কারগুলোর অন্যতম, যা প্রতি বছর পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতিতে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রদান করা।
এসআর
মন্তব্য করুন: