[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫
২৪ আশ্বিন ১৪৩২

যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরও গাজায় ইসরায়েলি হামলা: কেন থামছে না সহিংসতা?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৯ অক্টোবর ২০২৫ ৪:১২ পিএম

সংগৃহীত ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গর্বের সঙ্গে ঘোষণা দিয়েছেন, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী তার প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে স্বাক্ষর করেছে।

বুধবার স্থানীয় সময় রাতে নিজের ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ দেওয়া এক বার্তায় তিনি এ তথ্য জানান।

মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারও চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (X) পোস্টে বলেছেন, “এই চুক্তির মাধ্যমে গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটবে। সব ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পাবে, আর ত্রাণ প্রবেশে কোনো বাধা থাকবে না।”

গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে পাশে রেখে তার ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর সম্মতিতেই ওই পরিকল্পনার প্রাথমিক ধাপে চুক্তি সই হয়।

এর আগে ৬ সেপ্টেম্বর মিশরের পর্যটন শহর শারম আল শেখে ইসরায়েল, হামাস, যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিশরের প্রতিনিধিদের মধ্যে দুই দিনব্যাপী বৈঠক হয়। আলোচনার পর উভয় পক্ষ ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে সম্মত হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী সব ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে এবং ইসরায়েল গাজায় মোতায়েন সেনা সংখ্যা কমাবে। কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক ধাপে ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি বন্দির বিনিময়ে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেতে পারেন।

তবে বিশ্বজুড়ে যখন শান্তি ও ন্যায়বিচারের আহ্বান জোরদার হচ্ছে, তখনই যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। গাজার পশ্চিমাঞ্চলে একাধিক বিমান হামলার খবর এসেছে, যা নতুন করে সহিংসতার আশঙ্কা তৈরি করেছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র গাজার বাসিন্দাদের উত্তরাঞ্চলে না ফেরার কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। সেনাবাহিনীর আরবি মুখপাত্র আভিচায় আদরাই বলেছেন, “গাজার উত্তরাঞ্চল এখনো অত্যন্ত বিপজ্জনক যুদ্ধক্ষেত্র। ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সিটিকে ঘিরে রেখেছে। সরকারি নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কেউ যেন সেখানে না ফেরেন।”

অন্যদিকে, গাজা সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল-মুগাইর জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণার পরও ইসরায়েলি বিমান গাজা সিটি ও আশপাশের এলাকায় একাধিক হামলা চালিয়েছে।

এএফপি জানিয়েছে, বুধবার রাতেও উত্তর গাজায় কয়েকটি বড় বিস্ফোরণ শোনা গেছে। তবে এসব হামলায় হতাহতের সঠিক তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

গাজার অন্ধকার সড়কে তখনও মাইক হাতে সাংবাদিকরা যুদ্ধবিরতির বার্তা প্রচার করছিলেন। কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনীর নতুন সতর্কতা সেই আশার আলোকে অনিশ্চয়তার ছায়ায় ঢেকে দিচ্ছে—যেন যুদ্ধের শেষ রেখা এখনো অনেক দূরে।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর