নেপালে হঠাৎ করে ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স (টুইটার) ও রেডিটসহ জনপ্রিয় ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির সরকার।
নিবন্ধনবিহীন কার্যক্রম চালানোর অভিযোগে বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়।
২০২৩ সালে নেপালের তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় নির্দেশনা জারি করেছিল— দেশে কার্যক্রম চালাতে চাইলে সব সামাজিক নেটওয়ার্ককে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। ২৮ আগস্ট থেকে প্ল্যাটফর্মগুলোকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। কিন্তু ৪ সেপ্টেম্বর রাত পর্যন্ত মেটা (ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ), অ্যালফাবেট (ইউটিউব), এক্স, রেডিট ও লিংকডইনের মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলো নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দেয়নি। ফলে সরকার একযোগে ২৬টি প্ল্যাটফর্ম বন্ধের নির্দেশ দেয়।
যোগাযোগ ও তথ্যমন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং বলেন,
“একাধিকবার নোটিশ পাঠানো হলেও কোম্পানিগুলো নিবন্ধন করেনি। তাই আইন মেনেই তাদের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।”
সরকারের দাবি, ভুয়া অ্যাকাউন্ট, বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য এবং সাইবার অপরাধ দমনেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সব প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়নি। টিকটক, ভাইবারসহ আরও কয়েকটি সামাজিক নেটওয়ার্ক সরকারের সঙ্গে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করায় সেগুলো চালু থাকবে।
সরকারি সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে সড়কে নেমেছে দেশটির তরুণ প্রজন্ম, বিশেষত জেন-জি আন্দোলনকারীরা। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) তারা কাঠমান্ডুতে সংসদ ভবনের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাঁধে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বিভিন্ন অধিকার গোষ্ঠী সরকারের এই পদক্ষেপকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলে আখ্যা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, নিবন্ধনের নামে সরকার অনলাইনে সমালোচকদের দমন করতে চাইছে।
নেপালের সংসদে ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যম ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। বিলটিতে সঠিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার কথা বলা হলেও অধিকারকর্মীদের আশঙ্কা— এ আইন কার্যকর হলে সেন্সরশিপ বাড়বে এবং নাগরিকদের মৌলিক অধিকার খর্ব হবে।
এসআর
মন্তব্য করুন: