লোকসভার বর্ষা অধিবেশনে ভারত–মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্ক এখন তুমুল আলোচনার বিষয়।
তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও লোকসভার দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন—বহুল আলোচিত দুই দেশের বাণিজ্য চুক্তি আসলে কোন পর্যায়ে আছে, আর ক্রমবর্ধমান মার্কিন শুল্ক চাপের মুখে ভারতের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ কোন দিকে যাচ্ছে?
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের কয়েকটি রপ্তানি পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা কার্যকর হয়েছে ৭ আগস্ট থেকে। আরও বড় ধাক্কা আসতে পারে ২৭ আগস্ট—সেদিন থেকে অতিরিক্ত আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে, বিশেষত রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে ওয়াশিংটনের আপত্তির কারণে।
অভিষেকের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জিতিন প্রসাদ জানান, ২০২৫ সালের মার্চে শুরু হওয়া দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ইতিমধ্যেই পাঁচ দফা আলোচনা হয়েছে। তবে ষষ্ঠ দফার বৈঠক এখন অনিশ্চিত, কারণ ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—শুল্ক ইস্যুর সমাধান না হলে আলোচনায় অগ্রগতি হবে না।
শুল্কের প্রভাব নিয়ে অভিষেক আরও জানতে চান, বিশেষত বস্ত্র, ওষুধ এবং বৈদ্যুতিন খাতে কোনও নির্দিষ্ট মূল্যায়ন হয়েছে কি না। কেন্দ্র জানায়, আপাতত ওষুধ ও ইলেকট্রনিক খাতে নতুন শুল্ক আরোপ হয়নি, তবে রপ্তানিকারকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রেখে সম্ভাব্য প্রভাবের হিসাব কষা হচ্ছে। অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী লোকসভায় স্বীকার করেন—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া প্রায় ৫৫ শতাংশ পণ্যের ওপর শুল্ক প্রভাব ফেলতে পারে।
রাজনৈতিক মহলে এই ইস্যু ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অভিষেক অভিযোগ করেছেন, এটি ভারতের কূটনৈতিক ব্যর্থতা এবং সরকারকে অবিলম্বে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তাঁর মতে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যনীতি ও কূটনৈতিক কৌশলে দুর্বলতার ফলেই ভারত এখন চাপে পড়েছে।
ভারতীয় সরকারের অবস্থান, চাপের মুখে নতি স্বীকার করা হবে না। তবে বাস্তবতা হলো—শুল্কের আঘাতে কয়েকটি রপ্তানি খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বাণিজ্য চুক্তি যদি আটকে যায়, তাহলে শুধু অর্থনৈতিক সম্পর্কই নয়, যুক্তরাষ্ট্র–ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কও নতুন সংকটে পড়তে পারে।
এসআর
মন্তব্য করুন: