[email protected] মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
৩১ আষাঢ় ১৪৩২

ত্রাণ সরবরাহ ক্রমশ বন্ধ হওয়ায় ঝুঁকিতে বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২ জুলাই ২০২৫ ১০:৩১ পিএম

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ক্রমবর্ধমানভাবে ত্রাণ ও জরুরি সেবার সংকটে পড়ছে।

পর্যাপ্ত তহবিলের অভাবে খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা, জ্বালানিসহ বিভিন্ন জরুরি খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) সতর্ক করে বলেছে, যদি দ্রুত অর্থায়ন না বাড়ে, তাহলে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য জীবনরক্ষাকারী সেবাসমূহ ধসে পড়বে।

বর্তমানে বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১৩ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে, যা বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী জনগোষ্ঠী। গত ১৮ মাসে নতুন করে আরও প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসেছে। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। জাতিসংঘ ওই অভিযানের বর্ণনা দিয়েছে ‘জাতিগত নিধনের উদাহরণ’ হিসেবে।

শুক্রবার (১১ জুলাই) এক বিবৃতিতে ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, “বিশ্বব্যাপী তহবিল সংকটের কারণে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো মুখ থুবড়ে পড়তে যাচ্ছে। নতুন করে আগত এবং আগে থেকে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ ব্যাহত হচ্ছে।” সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জন্য রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ২৫৫ মিলিয়ন ডলার চাওয়া হলেও এর মাত্র ৩৫ শতাংশ অর্থায়ন হয়েছে।

তহবিল সংকটের কারণে সেপ্টেম্বরে রোহিঙ্গাদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রান্নার জন্য ব্যবহৃত এলপিজি গ্যাসও ফুরিয়ে যাবে। ডিসেম্বরের মধ্যে খাদ্য সহায়তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কক্সবাজারে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) ইতোমধ্যেই বাজেট ঘাটতির কারণে হাজার হাজার শিক্ষাকেন্দ্র স্থগিত করেছে। এতে প্রভাব পড়ছে ক্যাম্পের প্রায় ৪ লাখ ৩৭ হাজার শিশুর শিক্ষাজীবনে।

রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার (১২ জুলাই) কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বলেন, “স্বাস্থ্য খাত ভয়াবহ রকমের সংকটে পড়েছে। অনেক সেবা স্থগিত করা হয়েছে, যার ফলে গর্ভবতী নারী, শিশু ও দুর্বল জনগোষ্ঠী মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ছে।”

তিনি জানান, সাম্প্রতিক আগত রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন করে আবাসনের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। তাদের অনেকেই আগে আসা আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে গাদাগাদি করে বসবাস করছেন। পাশাপাশি পানি, স্যানিটেশন ও আশ্রয় ব্যবস্থাপনাও চরম ঝুঁকিতে রয়েছে।

“চলমান এই তহবিল সংকট রোহিঙ্গাদের চরম হতাশার দিকে ঠেলে দিচ্ছে,”—যোগ করেন মিজানুর রহমান। 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর