গাজা পরিস্থিতি নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ৬০ দিনের একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে ইসরাইল।
এই যুদ্ধবিরতির সময়কালেই স্থায়ী শান্তির পথ তৈরি করতে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবার (২ জুলাই) ভোরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া এক বার্তায় ট্রাম্প এ তথ্য জানান। তিনি লেখেন, “ইসরাইল ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য প্রয়োজনীয় শর্তে রাজি হয়েছে। এ সময় আমরা সব পক্ষের সঙ্গে মিলে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য কাজ করব।”
ট্রাম্প আরও বলেন, “কাতার ও মিসর শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছে। তাদের কাছ থেকে চূড়ান্ত প্রস্তাব আসবে বলে আশা করছি। আমি আশা করি, হামাস এই চুক্তি গ্রহণ করবে, কারণ যদি না করে—পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।”
গত কয়েক মাস ধরেই হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে ৬০ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চলছিল। এই উদ্যোগটি প্রথমে উত্থাপন করেছিলেন ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকোফ। পর্যবেক্ষকদের মতে, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ঘোষণায় সেই প্রস্তাবকেই সামনে আনা হয়েছে।
তবে আলোচনা দীর্ঘদিন থমকে ছিল। ইসরাইল যুদ্ধবিরতির পর গাজায় ফের হামলা চালানোর অধিকার রাখতে চায়, যা হামাসের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। হামাস বারবার বলেছে, তারা স্থায়ী যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা ছাড়া কোনো অস্থায়ী চুক্তিতে যাবে না।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প এবার উভয় পক্ষকে কিছুটা সন্তুষ্ট করতে চাইছেন। টাইমস অব ইসরাইল জানায়, স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ট্রাম্প এক ধরনের ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করছেন।
মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রচেষ্টায় কাতার ও মিসরের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তারা হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে বিরাজমান মতপার্থক্য দূর করে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি গাজায় যুদ্ধ বন্ধ চান। হোয়াইট হাউসও জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট গাজায় আর কোনো “হত্যাযজ্ঞ” দেখতে চান না এবং যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে তারা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন।
আগামী সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মধ্যে হোয়াইট হাউসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগেই যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইসরাইলের ওপর চাপ বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এই অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য বাস্তবায়ন মধ্যপ্রাচ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এসআর
মন্তব্য করুন: