পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে ভয়াবহ এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩ জন সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন।
শনিবার (২৮ জুন) আফগান সীমান্তসংলগ্ন উত্তর ওয়াজিরিস্তানের মীর আলি এলাকার খাদি বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২২ ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্টের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী ইউনিটের একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে আত্মঘাতী হামলাটি চালানো হয়। এটি ছিল একটি সমন্বিত আক্রমণ, যাতে বিস্ফোরণের তীব্রতায় পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে।
হামলায় নিহত সেনাসদস্য ছাড়াও আরও অন্তত ২৪ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৪ জন বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের জেলা সদর হাসপাতালসহ অন্যান্য স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে।
হামলার পরপরই সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করেন। এখন পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই হামলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
এ হামলার দায় স্বীকার করেছে উত্তর ওয়াজিরিস্তানে সক্রিয় স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠী হাফিজ গুলবাহাদার গ্রুপ। সম্প্রতি খাইবার, ওয়াজিরিস্তান ও খুররাম জেলাসহ পুরো খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা বেড়ে গেছে। এতে নিরাপত্তা বাহিনীকে বারবার লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।
পাকিস্তান সরকার জানিয়েছে, এসব হামলার পেছনে আফগানিস্তানভিত্তিক তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) দায়ী। ইসলামাবাদ টিটিপিকে ‘খারেজি’ হিসেবে অভিহিত করে এবং বহুবার আফগান সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সন্ত্রাস দমনে সামরিক অভিযান চালিয়েছে। তবে কাবুল সরকার বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, পাকিস্তানে হামলা চালানোর জন্য তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করা হচ্ছে না—এটি সম্পূর্ণভাবে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাজনিত সংকট।
বিশ্লেষকদের মতে, সম্প্রতি চালানো এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলাগুলোর একটি, যা দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর আবারও বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: