[email protected] শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
১৩ আষাঢ় ১৪৩২

‘অনুকূল পরিবেশে’ বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনা চায় ভারত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৭ জুন ২০২৫ ৬:১৩ পিএম

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী ভারত—শুধুমাত্র ‘অনুকূল পরিবেশে’।

এমন মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা ও সহযোগিতার জন্য একটি সুপ্রতিষ্ঠিত কাঠামো রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, অনুকূল পরিবেশে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে আলোচনা সম্ভব।”

জয়সোয়ালের এ মন্তব্য এসেছে এমন সময়ে, যখন ভারতীয় পার্লামেন্টের পররাষ্ট্রবিষয়ক স্থায়ী কমিটি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে।

ভারতীয় দৈনিক দ্য হিন্দু-র প্রতিবেদনে বলা হয়, এই বৈঠকে অংশ নেবেন সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শংকর মেনন, সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আতা হাসনাইন, ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস এবং জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক অমিতাভ মাত্তু।

১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি নবায়ন প্রসঙ্গে জয়সোয়াল বলেন, “আমরা এই বিষয়ে আলোচনায় আগ্রহী, তবে সেটি হতে হবে অনুকূল পরিবেশে এবং উভয় পক্ষের স্বার্থ রক্ষার ভিত্তিতে।”

চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জয়সোয়াল জানান, “ভারতের আশপাশে ঘটে যাওয়া পারিপার্শ্বিক ঘটনাগুলোর ওপর আমাদের নজর রয়েছে, যেগুলো ভারতের স্বার্থ ও নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক স্বাধীনভাবে বিকাশ পেলেও, প্রাসঙ্গিক পরিস্থিতি মাথায় রেখে তা মূল্যায়ন করা হয়।”

দ্য হিন্দু আরও জানিয়েছে, আসন্ন সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ধর্মীয় মৌলবাদের উত্থান, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং এসব ইস্যুর ফলে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তার ওপর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা হবে।

বিশেষজ্ঞরা বৈঠকে তুলে ধরবেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের সম্ভাব্য প্রেক্ষাপটে চীন-বাংলাদেশ কৌশলগত সম্পর্ক কীভাবে পুনর্গঠিত হতে পারে।

এছাড়া বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ভারতের ভাবমূর্তি প্রসঙ্গে যেসব নেতিবাচক ধারণা গড়ে উঠেছে, সেটিও আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক বাংলাদেশি মনে করেন, ভারত শুধু শেখ হাসিনার সরকারকে সমর্থন দিয়ে এসেছে, জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশে পিছিয়ে ছিল।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সংসদীয় কমিটি ভারতীয় আইনপ্রণেতাদের পরামর্শ দিতে পারে—বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক সমন্বয় গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

তারা ভারতের কৌশলগত নিরাপত্তার বিষয়টি আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কাছে আরও স্পষ্টভাবে উপস্থাপনের দিকেও গুরুত্ব দিতে পারে।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর