ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে ভাষণ দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
এই ভাষণে তিনি মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দেন এবং ইরানের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
খামেনি বলেন, “ট্রাম্প অবশেষে সত্য উন্মোচন করেছেন—যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য কেবল ইরানের সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ। কিন্তু আমরা কখনোই আত্মসমর্পণ করব না। ইরানি জাতি শক্তিশালী এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”
তিনি আরও দাবি করেন, “এই যুদ্ধে আমরাই বিজয়ী। আমরা আমেরিকার মুখে এক কঠিন থাপ্পড় মেরেছি। যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাত থেকে কিছুই অর্জন করতে পারেনি।”
খামেনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়েছে, কারণ তারা মনে করেছিল ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যাবে। এই উদ্দেশ্যেই তারা এই সংঘাতে নেমেছে।”
ভাষণের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি জায়নবাদী শাসনের বিরুদ্ধে ‘বিজয়ের’ জন্য অভিনন্দন জানান। ইসরায়েলের উদ্দেশে বলেন, “ভ্রান্ত ইহুদিবাদী শাসনের পতনের জন্য অভিনন্দন।”
প্রসঙ্গত, যুদ্ধ চলাকালে খামেনি দীর্ঘ সময় ধরে প্রকাশ্যে অনুপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, তিনি তেহরানের নিজ বাসভবন ছেড়ে একটি নিরাপদ বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখানে তিনি ইলেকট্রনিক যোগাযোগ থেকেও বিচ্ছিন্ন ছিলেন, এমনকি শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তারাও তার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেননি।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির পর খামেনির পুনরাগমন ইরানের জন্য নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, “খামেনি যখন প্রকাশ্যে ফিরে আসবেন, তিনি একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ইরান দেখবেন—যুদ্ধবিধ্বস্ত, ক্ষতবিক্ষত এবং গভীরভাবে ক্ষুব্ধ।”
উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির মধ্যস্থতায় ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এরই মধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, খামেনিকে হত্যা করার সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
এসআর
মন্তব্য করুন: