ইরানের ওপর যেকোনো ধরনের সামরিক আগ্রাসনকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, ইরানের ওপর আক্রমণ যেই করুক না কেন, তা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।
সোমবার (২৩ জুন) তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি এক প্রতিবেদনে জানায়, ইসরায়েল ও তার মিত্রদের হামলার বিরুদ্ধে ইরানকে রক্ষায় তুরস্ক সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে। আঙ্কারা এ ধরনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জোরাল কূটনৈতিক উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছে।
এরদোয়ান বলেন,
“তুরস্ক কখনোই ইরানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের হস্তক্ষেপকে সমর্থন করে না। হামলা যেই করুক, তুরস্ক এর বিরুদ্ধে স্পষ্ট ও শক্ত প্রতিক্রিয়া জানাবে।”
একই বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি ইরানে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে “একেবারেই বিনা উসকানিতে চালানো আগ্রাসন” বলে অভিহিত করেন। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে পুতিন বলেন,
“ইরানের বিরুদ্ধে যে সামরিক হামলা চালানো হচ্ছে, তার কোনো ন্যায্যতা নেই। মস্কো এই অন্যায় যুদ্ধের বিরুদ্ধে এবং ইরানি জনগণের পাশে আছে।”
বর্তমানে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে অবস্থান করছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। সোমবার পুতিনের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি অংশ নেন। বৈঠকে পুতিন বলেন,
“আপনার উপস্থিতি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আজকের সংকট থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজে বের করতে আমরা যৌথভাবে কাজ করব।”
আরাগচি পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন,
“রাশিয়া ইতিহাসের সঠিক পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও নীতিমালার সরাসরি লঙ্ঘন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি এবং প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান পুতিনকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।”
গত ১৩ জুন থেকে ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলায় ইরানে প্রাণহানির সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০০ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৩,০০০-এর বেশি।
তবে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্টস ইন ইরান দাবি করেছে, আসল মৃত্যুর সংখ্যা সরকার ঘোষিত সংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ প্রধান হোসেইন কারমানপোর জানান, নিহতদের মধ্যে ১৩ জন শিশু রয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে ছোটটির বয়স মাত্র ২ মাস। এছাড়া, ৪৪ জন নারী নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দু’জন ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা।
কারমানপোর বলেন,
“ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় হতাহতদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। এ হামলা মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল।”
এসআর
মন্তব্য করুন: