মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র আঞ্চলিক মিত্রদের সমর্থন চাচ্ছে— এমন সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিফোনে দীর্ঘ আলোচনা করেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন নির্বাচনের রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) অনুষ্ঠিত এই ফোনালাপে প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ ও রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট। তবে আলোচনার সুযোগে মোদি কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করেন।
বিবিসির বরাতে জানা গেছে, মোদি ফোনালাপে কাশ্মীর প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, “কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে বিরোধে কোনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ভারত মেনে নেয় না।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ভারত অতীতেও কখনো বাইরের কোনো মধ্যস্থতা মেনে নেয়নি, ভবিষ্যতেও নেবে না।”
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্রি এক ভিডিও বিবৃতিতে জানান, মোদি ও ট্রাম্পের মধ্যে ফোনালাপটি ৩৫ মিনিট স্থায়ী হয়। এতে মোদি কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের দীর্ঘদিনের অবস্থান স্পষ্ট করেন।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলায় একটি হামলায় ভারতীয় সেনা নিহত হয়। এই ঘটনার পর ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ে। ওই সময়ে ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি মধ্যস্থতা করে সম্ভাব্য যুদ্ধ এড়াতে সহায়তা করেছেন।
তবে মোদি এই দাবি নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, “এই যুদ্ধবিরতি হয়েছিল কেবল ভারত ও পাকিস্তানের বিদ্যমান সামরিক যোগাযোগ চ্যানেলের মাধ্যমে এবং এটি পাকিস্তানের অনুরোধেই ঘটেছে— এতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই।”
তিনি ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, “ভারত ও পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিকভাবেই সব বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যাপারে একমত হয়েছিল। ভারত এখনো সেই অবস্থানেই রয়েছে।”
ফোনালাপে মোদি আরও বলেন, “ভারত আর সন্ত্রাসী হামলাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখবে না। বরং তা সরাসরি যুদ্ধ হিসেবে বিবেচিত হবে।” এটি পাকিস্তানের প্রতি ভারতের কঠোর বার্তার ইঙ্গিত বহন করে।
পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি আরও জানান, ফোনালাপে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তি বা ভারত-পাকিস্তান মধ্যস্থতা— কোনো বিষয়েই আলোচনা হয়নি।
এসআর
মন্তব্য করুন: