ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের দীর্ঘস্থায়ী সমাধানে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক নীতির প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
তিনি জানিয়েছেন, ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ফ্রান্স এখন ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে।
বুধবার (২৮ মে) ইন্দোনেশিয়া সফরের সময় এক বক্তব্যে ম্যাক্রোঁ বলেন, “শুধুমাত্র রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমেই আমরা দীর্ঘমেয়াদে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারি।” একইসঙ্গে তিনি ঘোষণা দেন, সৌদি আরবের সঙ্গে যৌথভাবে নিউইয়র্কে গাজা সংকট নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। সেই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য হবে—ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান এবং ইসরায়েলের নিরাপদ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অবস্থান নিশ্চিত করা।
বিশ্লেষকদের মতে, ফ্রান্সের এই অবস্থান ইসরায়েলের বিরূপ প্রতিক্রিয়া ডেকে আনতে পারে এবং পশ্চিমা জোটের মধ্যে মতপার্থক্য আরও তীব্র হয়ে উঠতে পারে।
এর আগেও, গত ৯ এপ্রিল ফরাসি টেলিভিশন চ্যানেল France 5-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ বলেছিলেন, “আমরা এমন একটি পথ বেছে নিয়েছি, যেখানে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি সামনে রয়েছে। আশা করছি, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এটি বাস্তবে রূপ নেবে।”
তিনি আরও জানান, “জুন মাসে সৌদি আরবের সঙ্গে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত কনফারেন্সে আমরা নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত, যেখানে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্বীকৃতি প্রসঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক ঐকমত্য গড়ে তোলার চেষ্টা হবে।”
বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৪৫টি দেশ ইতোমধ্যে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও এশিয়ার বেশিরভাগ দেশ। তবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, পশ্চিম ইউরোপের অধিকাংশ দেশ, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া এখনো ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়নি।
গত এপ্রিলেই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাবটি যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে বাতিল হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সালের ১৫ নভেম্বর, প্রথম ইন্তিফাদা চলাকালে ফিলিস্তিনের নেতা ইয়াসির আরাফাত জেরুজালেমকে রাজধানী ঘোষণা করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণার প্রায় চার দশক পর, ফ্রান্সের অবস্থান আন্তর্জাতিক মঞ্চে নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: