বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২৮২০ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সাময়িক হিসাব প্রকাশ করে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিবিএসের তথ্যে বলা হয়, গত অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২৭৩৮ ডলার। সে অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৮২ ডলার। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ মাথাপিছু আয় ছিল ২৭৯৩ ডলার, যা এবার অতিক্রম করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য হ্রাসের কারণেও আয় বৃদ্ধির এই চিত্র দেখা গেছে। চলতি অর্থবছরে গড় বিনিময় হার ধরা হয়েছে ১২০ টাকা ২৯ পয়সা, যা আগের বছরের ১১১ টাকা ৬ পয়সার চেয়ে বেশি।
টাকার অঙ্কে চলতি বছরের মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২২১ টাকা, যেখানে আগের বছর তা ছিল ৩ লাখ ৪ হাজার ১০২ টাকা।
বিবিএস জানিয়েছে, মাথাপিছু আয় মানে ব্যক্তির সরাসরি উপার্জন নয়; বরং এটি দেশের মোট জাতীয় আয় (যার মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও প্রবাসী আয়) জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে নির্ধারিত হয়।
অর্থনীতির এই অগ্রগতি ইতিবাচক বার্তা দিলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আয় বৈষম্য ও উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এখনও সংকটে রয়েছে। সরকার ইতোমধ্যে এসব শ্রেণির জন্য সহায়তামূলক কর্মসূচির পরিকল্পনা করছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নিম্নআয়ের মানুষ ও শ্রমজীবীদের জন্য ‘টার্গেটেড ক্যাশ ট্রান্সফার’, খাদ্য সহায়তা ও নগদ ভর্তুকির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়ানো এবং একটি ‘আর্থিক সমতা তহবিল’ গঠনের পরিকল্পনাও রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, মাথাপিছু আয়ের এই ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেশের অর্থনীতির দৃঢ়তা নির্দেশ করে। তবে, আয়ের ভারসাম্য নিশ্চিত না হলে এর সুফল সবার মাঝে পৌঁছাবে না। সরকারের পরিকল্পিত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন হলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: