চেনাব নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করল ভারত

কাশ্মীর ইস্যু ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে।

এমন প্রেক্ষাপটে ভারত শনিবার চেনাব নদীর ওপর নির্মিত বাগলিহার বাঁধ থেকে পাকিস্তানে পানির প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো।

বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে ইকোনমিক টাইমস জানায়, শুধু বাগলিহার নয়, ভারত আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প—উত্তর কাশ্মীরের কিশনগঙ্গা বাঁধ (ঝিলাম নদীর ওপর)—সংশ্লিষ্ট এলাকাতেও পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা করছে।

জম্মু অঞ্চলের রামবান জেলায় অবস্থিত বাগলিহার বাঁধ এবং কিশনগঙ্গা প্রকল্প ভারতের জন্য নদীর পানি ব্যবস্থাপনায় কৌশলগত সুবিধা তৈরি করেছে। আর এই সুবিধাকেই এবার ব্যবহার করছে দিল্লি।

এ পদক্ষেপের পেছনে সাম্প্রতিক একটি সন্ত্রাসী হামলা বড় কারণ হিসেবে উঠে এসেছে। ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ২৩ এপ্রিল একতরফাভাবে 'সিন্ধু পানি চুক্তি' স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়।

১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত এই ঐতিহাসিক চুক্তির আওতায় ভারত ও পাকিস্তান সিন্ধু ও এর উপনদীগুলোর পানি বণ্টনের নিয়মে আবদ্ধ ছিল।

ভারতের দাবি, পহেলগাঁও হামলার সঙ্গে সীমান্তপারের সন্ত্রাসীদের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত তারা এ বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি।

এর জবাবে ২৪ এপ্রিল পাকিস্তান হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায়, ভারত যদি একতরফাভাবে সিন্ধু চুক্তি বাতিল করে, তবে তারা ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তিও স্থগিত করতে পারে। এমনকি ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার কথাও ভাবছে ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ভারতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে এ ঘটনায় একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে প্রকৃত সত্য উন্মোচিত হয়।

এই জলপথ অবরোধ ও পাল্টা হুমকির মধ্য দিয়ে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জটিল আকার নিচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সামরিক প্রস্তুতি ও কৌশলগত অবস্থান শক্তিশালী করার এই প্রবণতা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।