প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে আগস্টের শুরুর দিকে সংঘটিত ধারাবাহিক ঘটনাবলীর ফলেই তৎকালীন সরকার ক্ষমতা হারায়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গণঅভ্যুত্থানের শেষ পর্যায়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ বিক্ষোভকে আরও উসকে দিয়েছিল।
ওএইচসিএইচআর-এর মতে, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবিকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিক্ষোভ দমন করতে সরকারের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষা করার আহ্বান জানানো হয়।
তবে আন্দোলনকারীরা এটি যথাযথ মনে করেননি। ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই হাইকোর্টের কোটা সম্পর্কিত রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১৮ জুলাই থেকে বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়ে ওঠে এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটে। সাধারণ জনগণও বিক্ষোভে অংশ নেয়, যার ফলে নিরাপত্তা বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নেয়।
বিভিন্ন স্থানে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয় এবং গুলি চালানোর ঘটনাও ঘটে।
ওএইচসিএইচআর দাবি করেছে, ১৯ জুলাই থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান চালায় এবং নিরীহ নাগরিকদেরও আটক করা হয়।
২১ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট নতুন রায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কোটা কমিয়ে আনলেও তখন পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের দাবি আরও বিস্তৃত হয়ে যায়, যার মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ ও নির্যাতনকারীদের বিচারের দাবিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দল সরকারবিরোধী ঐক্যের ডাক দেয়, যা আন্দোলনকে আরও বেগবান করে।
২৮ জুলাই কয়েকজন শীর্ষ ছাত্রনেতাকে আটক ও তাদের ‘স্বীকারোক্তিমূলক’ ভিডিও প্রকাশ করার পর জনসাধারণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
৫ আগস্ট ঢাকায় ব্যাপক গণমিছিল অনুষ্ঠিত হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকার-সমর্থকরা কিছু স্থানে গুলি চালালেও সেনাবাহিনী ও বিজিবি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিক্ষোভকারীদের বাধা দেয়নি।
ওএইচসিএইচআর-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে ৫ আগস্ট দুপুরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীর সহায়তায় দেশত্যাগ করেন। আন্দোলনকারীদের একক দাবি ছিল সরকারের পদত্যাগ, যা শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সরকার পতনের পেছনে জনগণের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ, প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ এবং সেনাবাহিনীর নিরপেক্ষ ভূমিকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
এসআর
মন্তব্য করুন: