[email protected] মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কারামুক্ত ৩৬৯ ফিলিস্তিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ৮:০৯ পিএম
আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ৮:১২ পিএম

ফাইল ছবি

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস আরও তিনজন ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে।

শনিবার আন্তর্জাতিক সংস্থা রেডক্রসের মাধ্যমে তাদের ইসরাইলের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর বিনিময়ে, ইসরাইলের দুই কারাগার থেকে ৩৬৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

রেডক্রসের হাতে তিন ইসরাইলি জিম্মি তুলে দেওয়ার আগে, গাজার খান ইউনিস শহরে হামাস যোদ্ধারা তাদের একটি মঞ্চে নিয়ে যান। সেখানে জমায়েত হওয়া লোকদের উদ্দেশে তারা ভাষণ দেন এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় বাকি জিম্মি ও বন্দি বিনিময় শেষ করার আহ্বান জানান। পরে তাদের রেডক্রসের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে মুক্তি পাওয়া তিন জিম্মির নাম প্রকাশ করা হয়েছে। তারা হলেন সাগুই দেকেল চেন, সাশা ত্রুপানভ এবং ইয়াইর হর্ন। ইসরাইলি বাহিনী এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তেল আবিবে স্বাগত জানাতে লোকজন জড়ো হন এবং তাদের হাতে ‘‘যুদ্ধবিরতি পুরোপুরি শেষ করুন’’ লেখা পোস্টার ছিল।

এর কিছুক্ষণ পর, ফিলিস্তিনি বন্দিদের বহনকারী একটি বাস ইসরাইল পরিচালিত কারাগার থেকে রামাল্লা, পশ্চিম তীরে প্রবেশ করে। সেখানে উপস্থিত ফিলিস্তিনিরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তাদের স্বাগত জানান। অন্যদিকে, নেগেভ মরুভূমির ইসরাইলি কারাগার থেকে কয়েকটি বাসে ফিলিস্তিনি বন্দিরা গাজায় পৌঁছান।

গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর ছয়বার ইসরাইলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দি বিনিময় হয়েছে। এই তিনজনসহ মোট ১৯ জন জিম্মি মুক্তি পেয়েছেন। যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপে ৩৩ জন জিম্মি মুক্তির কথা ছিল হামাসের।

আজ, শনিবার, জিম্মি মুক্তির বিষয়ে কিছুটা শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে হামাস জিম্মি মুক্তি স্থগিত করার হুমকি দিয়েছিল। ইসরাইল পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, এমনটি হলে গাজায় আবার হামলা শুরু করবে তারা। তবে শুক্রবার, দুই পক্ষই জানায় যে, পরিকল্পনা অনুযায়ী শনিবার জিম্মি ও বন্দি মুক্তি দেওয়া হবে।

গাজায় যুদ্ধবিরতি তিন ধাপে অনুষ্ঠিত হবে, যার প্রথম ধাপ ৪২ দিন চলবে। দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা কয়েক দিনের মধ্যে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন হামাসের এক কর্মকর্তা। এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল একটি সূত্রও একই তথ্য নিশ্চিত করেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনা করতে, আজ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইসরাইলে পৌঁছাবেন।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের গাজায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং উপত্যকার বাসিন্দাদের বিতাড়িত করার পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে, আগামী বৃহস্পতিবার রিয়াদে একটি সম্মেলনে মিসর, জর্ডান, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) নেতারা যোগ দেবেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, ইসরাইলে হামলা চালায় হামাস। এতে প্রায় ১,২০০ জন নিহত হন এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা। সেদিন থেকেই ইসরাইল গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে। ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত গাজায় ৪৮,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১,১০,০০০-এর বেশি আহত হয়েছেন।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর