মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজার বাসিন্দাদের জর্ডান বা মিশরে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যাতে তারা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারেন।
তিনি এই বিষয়টি নিয়ে মিশর এবং জর্ডানের সঙ্গে আলোচনা করার কথা বলেন। তবে, হামাস তার এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
গাজার নিয়ন্ত্রক এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এক বিবৃতিতে ইসরাইলকে "আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ফ্যাসিবাদী" আখ্যা দিয়ে জানিয়েছে, তারা নিজেদের ভূমি থেকে বিতাড়িত হওয়ার কোনো চেষ্টা মেনে নেবে না। হামাস ফিলিস্তিনি জনগণকে স্বাধীনতা অর্জনে সহায়তা করতে এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য মার্কিন প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে।
এর আগে, মিশর এবং জর্ডানও ট্রাম্পের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, "জর্ডানের বাসিন্দাদের জন্য জর্ডান, আর ফিলিস্তিনের বাসিন্দাদের জন্য ফিলিস্তিন রাষ্ট্র।"
ট্রাম্প শনিবার তার এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের বলেন, "গাজা এখন প্রায় ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে, সেখানে সবকিছুই ধ্বংস হয়ে গেছে। তাই আমি চাই, ফিলিস্তিনিরা অন্য কোনো স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারে।" তিনি গাজা পরিষ্কার করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে জর্ডানে ২৩ লাখ ৯০ হাজারের বেশি নিবন্ধিত ফিলিস্তিনি শরণার্থী রয়েছে। এছাড়া, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫৯ লাখ ফিলিস্তিনি শরণার্থী রয়েছে, যাদের অধিকাংশই ১৯৪৮ সালে ইসরাইল প্রতিষ্ঠার সময় পালিয়ে আসা লোকদের বংশধর।
গাজার উপর ইসরাইলি হামলা হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটিয়েছে এবং গাজার অধিকাংশ অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। জাতিসংঘের তথ্যে জানানো হয়েছে, ইসরাইলি বিমান হামলায় গাজার প্রায় ৬০ শতাংশ ভবন, স্কুল ও হাসপাতাল ধ্বংস হয়েছে, এবং ৯২ শতাংশ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজার ৯০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং অনেকেই বারবার স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হয়েছেন, কিছু কিছু মানুষ দশবারও স্থানান্তরিত হয়েছেন।
ট্রাম্পের এই মন্তব্য মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির সঙ্গে বিরোধপূর্ণ, কারণ যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের জন্য দুই রাষ্ট্রের সমাধানের পক্ষপাতী।
এসআর
মন্তব্য করুন: