বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে গভীর সংকটে রয়েছে এবং সামনে এই সংকট আরও তীব্র হতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে গভীর সংকটে রয়েছে এবং সামনে এই সংকট আরও তীব্র হতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক
শুক্রবার প্রকাশিত সংস্থাটির ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস জানুয়ারি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে দেশের অর্থনৈতিক মন্দা, রাজস্ব ঘাটতি, এবং বাজেট বাস্তবায়নে জটিলতা গভীর আকার ধারণ করেছে।
সরকারি বিনিয়োগের ঘাটতি অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সামাজিক সুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ১ শতাংশে নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সংকটের মূল কারণগুলো হলো:
বিশ্বব্যাংক আরও বলেছে, করোনার ধাক্কা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ।
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে কয়েকটি সুপারিশ দিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য:রজস্ব আদায় ব্যবস্থার সংস্কার ও আয় বাড়ানো। রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনা, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্দরমিত গিল বলেন, "বাংলাদেশ সরকারের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। ইতোমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলেও সংকট মোকাবিলায় তা যথেষ্ট নয়। স্বল্পমেয়াদি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জরুরি উদ্যোগ প্রয়োজন।"
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, তৈরি পোশাক শিল্প, যা বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রধান চালিকাশক্তি, তা চাহিদার অভাবে সংকটময় অবস্থায় রয়েছে। ফলে এই খাতে আয় হ্রাস পাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
অক্টোবরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মূল্যস্ফীতির কারণে প্রবৃদ্ধির হার ৪ শতাংশ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক পূর্বাভাসে এই হার ৪ দশমিক ১ শতাংশ করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের মতে, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো এখনও কার্যকরভাবে বাজারে প্রভাব ফেলতে পারেনি। ফলে এই সংকট দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে।
বিশ্বব্যাংক মনে করে, দ্রুত অর্থনৈতিক কার্যক্রম বৃদ্ধি, রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করলে সংকট মোকাবিলায় ইতিবাচক ফল আসতে পারে।
তবে এর জন্য সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং সুষ্ঠু বাস্তবায়ন প্রয়োজন।
এসআর
মন্তব্য করুন: