[email protected] শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
২৮ চৈত্র ১৪৩১

টিউলিপ ইস্যুতে কেলেঙ্কারি ঠেকাতে পারবেন না স্টারমার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ৭:২৬ পিএম

ফাইল ছবি

বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার দুর্নীতির অভিযোগ এবং উদ্বেগের মধ্যে চাপের মুখে পড়েছেন, বিশেষত যখন দেশটির নগরমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক রব পাওয়েল স্কাই নিউজে এক প্রতিবেদনে বলেন, "যদি টিউলিপ পদত্যাগ করেন, তবে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষতি যা হওয়ার তা ইতোমধ্যেই হয়ে গেছে। বেশিরভাগ রাজনৈতিক কেলেঙ্কারি এমন একটি পয়েন্টে পৌঁছে, যেখানে পদত্যাগ আরও বেশি প্রশ্নের জন্ম দেয়।" তিনি আরও বলেন, "এই পরিস্থিতিতে টিউলিপের পদত্যাগের পর আরও প্রশ্ন উঠতে পারে—যে কেন ডাউনিং স্ট্রিট এই বিষয়টিকে এতটা দীর্ঘায়িত হতে দিল?"

টিউলিপ সিদ্দিক বিভিন্ন সময় দাবি করেছেন যে, তিনি কখনোই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে, স্কাই নিউজের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে যে, তিনি একটি ব্লগে লেখেন, যেখানে তিনি শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে গর্ব করেছেন এবং একসাথে ছবি প্রকাশ করেছেন। ২০০৮ সালের শেষের দিকে এবং ২০০৯ সালের শুরুতে লেবার পার্টির কর্মী হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে, শেখ হাসিনা তাঁর জন্য প্রচারণা চালিয়েছেন এবং তাদের বিজয় উদযাপন করেছিলেন।

এছাড়া, অভিযোগ উঠেছে যে, টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশে রাশিয়ার সঙ্গে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তি সম্পাদনে মধ্যস্থতা করেছেন এবং এতে তিনি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। বাংলাদেশি লন্ডন প্রবাসী ডেভেলপার আবদুল মোতালিফ টিউলিপকে একটি ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছিলেন, যেটি তিনি গোপন রেখেছিলেন, তবে ওই ফ্ল্যাটে বসবাস করছিলেন।

এদিকে, একজন আইনজীবী মঈন গণি টিউলিপের বোন আজমিন সিদ্দিক রূপন্তিকে একটি ফ্ল্যাট উপহার দেন, এবং তাতেও টিউলিপ বসবাস করছেন। এসব অভিযোগে বৃটিশ রাজনীতিতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

বৃটিশ লেবার পার্টির প্রথমবারের এমপি হওয়ার পর কিয়ার স্টারমার ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সফর করেন। সেখানে তিনি শেখ হাসিনার সঙ্গে একটি সাক্ষাৎ করেছিলেন, যা পরে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের ভিত্তি হয়।

ডেইলি মেইল জানিয়েছে, এই সফরের পরই স্টারমারের বাংলাদেশ সফর এবং শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে, এবং স্টারমারের যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পেছনে বাংলাদেশি আওয়ামী লীগের সাহায্য ছিল।

এদিকে, বাংলাদেশের ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, লন্ডনে টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পত্তির বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। তাঁর এ অভিযোগের পর, বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি বেইডনক টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছেন।

সবশেষে, টিউলিপের পদত্যাগের সম্ভাবনা কিংবা না হলেও, স্যার কিয়ের স্টারমার এ এক বিতর্কিত ইস্যুর মুখে পড়েছেন, যা বৃটিশ রাজনীতিতে বড় প্রশ্ন তৈরি করেছে।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর