বাংলাদেশের অবকাঠামো প্রকল্প থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
এই তদন্তে নাম এসেছে শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে এবং যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকেরও।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ অফিসের ন্যায় এবং নৈতিকতা দল (পিইটি) টিউলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সানডে টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক প্রকল্প থেকে ৪ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ করতে সহায়তা করেছেন।
টিউলিপ সিদ্দিক, যিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০১৩ সালে রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে এক দুর্নীতির চুক্তি করতে সহায়তা করেছিলেন। এই প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানোর মাধ্যমে শেখ হাসিনার পরিবার এবং তার মন্ত্রীরা প্রায় ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড সরিয়ে নিয়েছে।
টিউলিপ সিদ্দিককে গত বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তবে এই খবরটি রোববার সামনে আসে। তিনি দেশটির মন্ত্রিপরিষদ অফিসের কর্মকর্তাদের কাছে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের দুর্নীতির বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দেন। অভিযোগ অনুযায়ী, এই প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য থেকেও বেশি অর্থ স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।
সানডে টাইমস জানিয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের বন্ধু এবং তিনি হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেইট আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন, যা স্টারমারের আসন হবর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্রাসের পাশের আসন।
এদিকে, বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, এবং তাদের পরিবারের কয়েকজন সদস্যসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগ, এই দুর্নীতির সাথে যুক্ত ছিলেন তারা, এবং সেই তদন্তের আওতায় টিউলিপ সিদ্দিকও রয়েছেন। বাংলাদেশে দীর্ঘ ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনাকে স্বৈরশাসক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়, এবং তার সরকার কঠোরভাবে ভিন্নমত দমন করত।
তাছাড়া, চলতি বছরের জুলাই-অগাস্টে রাজনৈতিক আন্দোলন চলাকালে 'মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে' জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে, যেখানে হাজারেরও বেশি আন্দোলনকারী নিহত হয়।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগগুলো তোলার পর, তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চাপ বাড়ছে এবং তার কার্যক্রমের প্রতি নজর রাখা হচ্ছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: