কালোজাদুর মাধ্যমে সন্তানের মৃত্যু হয়েছে—এমন ধারণা থেকে বয়স্কদের বিরুদ্ধে রীতিমতো হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে হাইতির একটি গ্যাং!
রাজধানীজুড়ে গ্যাংস্টারদের তাণ্ডবে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৮০ জন, যাদের বেশিরভাগই ষাট বছরের বেশি বয়সী। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ-এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছেলের অজানা রোগে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তান্ত্রিকের শরণাপন্ন হন গ্যাং নেতা মনেল ওরফে মিকানো ফেলিক্স। তান্ত্রিক জানান, কোনো এক বয়স্ক লোকের জাদুটোনার কারণেই তার ছেলে অসুস্থ। তবে সব চেষ্টার পরও ছেলেকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বয়স্কদের খুঁজে হত্যার নির্দেশ দেন মনেল।
গ্যাং সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ষাটোর্ধ্ব বয়স্কদের হত্যা করে। হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। দু’দিন ধরে চলা এই তাণ্ডবে শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এ হত্যাযজ্ঞের পর হাইতি প্রশাসন জানিয়েছে, গ্যাং নেতা মনেল ও তার সদস্যরা সহিংসতার সকল সীমা অতিক্রম করেছে। তাদের অপরাধের খবর ইতোমধ্যে জাতিসংঘেও পৌঁছেছে। জাতিসংঘ হাইতি সরকারের কাছে এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মুইজের হত্যার পর থেকেই রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং গ্যাং সহিংসতায় জর্জরিত হাইতি। দেশটিতে গ্যাংদের দৌরাত্ম্য এবং সহিংসতার মাত্রা রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে হাইতিতে গ্যাং সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ।
হাইতিতে এই ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ দেশের ক্রমবর্ধমান অস্থিরতার নতুন উদাহরণ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে হাইতি প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: