[email protected] শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
৩ মাঘ ১৪৩১

খেলাপি ঋণের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি: আইএমএফের প্রশ্নের মুখে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ৩:৩০ এএম

ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) এর অন্যতম শর্ত ছিল খেলাপি ঋণ কমাতে হবে।

তবে, চলমান পরিস্থিতিতে খেলাপি ঋণ কমেনি, বরং তা লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে। আগামী বছরেও খেলাপি ঋণ কমানোর সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ, বরং আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

৪ ডিসেম্বর আইএমএফ মিশন বাংলাদেশে আসছে, এবং তাদের মূল প্রশ্ন হবে: কেন্দ্রীয় ব্যাংক কীভাবে খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাবে? কী কৌশল অবলম্বন করবে? কেন হঠাৎ এত বেশি খেলাপি ঋণ বেড়ে গেল? পাশাপাশি, আগের সরকারের তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করা হতে পারে।

সূত্র জানায়, আইএমএফের সম্ভাব্য প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংক যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। আইএমএফের সামনে এই সময় ব্যাংক খাতে লুটপাট এবং পাচার হওয়া অর্থের চিত্র উপস্থাপন করা হবে।

এসব ঋণ আদায়যোগ্য অবস্থায় না থাকায় এগুলো খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে, যা ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। সামনে আরও কিছু ঋণ মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে এবং সেগুলোও খেলাপি হিসেবেই চিহ্নিত হবে, যার ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে।

আইএমএফ মিশনটি ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের পূর্ববর্তী শর্তগুলোর অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে, এবং সরকারের চাওয়া বাড়তি অর্থের সম্ভাব্যতা যাচাই করবে।

আইএমএফের অন্যতম শর্ত ছিল, আগামী মার্চের মধ্যে খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা আন্তর্জাতিক মানের সাথে মিলিয়ে সংশোধন করা। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে নতুন একটি সার্কুলার জারি করেছে, যা আগামী বছরের এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।

এতে, ঋণ বা ঋণের কিস্তির নির্ধারিত পরিশোধের সময়সীমার তিন মাস পর থেকেই ঋণকে খেলাপি হিসেবে গণ্য করা হবে। এর ফলে, খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।

এদিকে, ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করেছিল, যার মধ্যে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণের হার ৮ শতাংশের নিচে নামানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।

তবে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশেষ করে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, খেলাপি ঋণ কমানোর লক্ষ্য অর্জন করা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।

আইএমএফের আরও একটি শর্ত ছিল খেলাপি ঋণ আদায় বাড়ানোর জন্য এবং ঋণখেলাপিদের সম্পদ জব্দ করে তা থেকে ঋণ আদায় করার জন্য একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি গঠন করা।

এ বিষয়ে সরকার ইতোমধ্যে নীতিমালা তৈরি করছে, তবে দেশে এ ধরনের কোম্পানি গঠনের জন্য অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির অভাব রয়েছে।

ভারত, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, চীন, এবং নেপাল এই ধরনের কোম্পানি গঠন এবং কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে, এবং বাংলাদেশের ব্যাংকাররা এসব দেশের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

এছাড়া, কেন্দ্রীয় ব্যাংক খেলাপি ঋণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে আরও উচ্চতর করার প্রস্তাব করতে পারে, কারণ বর্তমান বাস্তবতায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বাড়বে।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর