দৈনন্দিন ছোট ছোট অভ্যাসও শরীরের ওপর বড় প্রভাব ফেলে—
এ কথা আমরা প্রায়ই দেখি। রসুন এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যা বহু যুগ ধরে নানা রোগ প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এতে রয়েছে অ্যালিসিনসহ বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের নানা কার্যক্রমকে সহায়তা করে। কিন্তু ঘুমানোর আগে প্রতিদিন মাত্র একটি রসুনের কোয়া খেলে শরীর কীভাবে উপকৃত হতে পারে? চলুন জেনে নেওয়া যাক—
১. হজম প্রক্রিয়া ভালো রাখে
২০১৯ সালের এক গবেষণা বলছে, রসুন হজম এনজাইম সক্রিয় করতে সহায়তা করে এবং পেট ফাঁপা কমাতে সাহায্য করে। কয়েক সপ্তাহ রাতে নিয়মিত কাঁচা রসুন খেলে সকালবেলা গ্যাস কম হওয়া ও হজমে স্বস্তি পাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এতে থাকা প্রাকৃতিক প্রিবায়োটিক উপাদান অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়ায়, যা হজমশক্তি উন্নত করে।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে
২০২৩ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, রসুনে থাকা অ্যালিসিন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সক্রিয় রাখে। এতে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি–ইনফ্লেমেটরি গুণ রয়েছে, যা মৌসুমী সর্দি–কাশি বা সংক্রমণ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে। ফলে প্রতিদিন রাতে একটি রসুন খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা বাড়তে পারে।
৩. শরীরের প্রদাহ কমায়
২০১৫ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, রসুনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহ–নিরোধী যৌগ অভ্যন্তরীণ প্রদাহ ধীরে ধীরে কমাতে সহায়ক। কয়েক সপ্তাহ নিয়মিত গ্রহণ করলে শরীরে শক্তি বাড়া, ব্যথা কমে আসা এবং কম ক্লান্ত লাগার মতো পরিবর্তন অনুভূত হতে পারে।
৪. হৃদপিণ্ডের সুরক্ষায় সাহায্য করে
২০১৩ সালের গবেষণায় উল্লেখ করা হয় যে, রসুন উচ্চ রক্তচাপ কমাতে এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা রাখতে পারে—যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। এটি রক্তনালীকে শিথিল করে রক্তসঞ্চালন উন্নত করে। রাতে রসুন খেলে শরীর এসব উপকারী উপাদান দীর্ঘসময় ধরে ব্যবহার করতে পারে।
৫. রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে
২০২৩ সালের গবেষণাগুলোতে বলা হয়েছে, রসুন রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে কিছুটা সহায়ক হতে পারে। রাতে একটি রসুন খেলে শরীর ইনসুলিন–সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা তুলনামূলক স্থিতিশীল রাখতে পারে। যদিও এটি ওষুধের বিকল্প নয়, তবে স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের অংশ হিসেবে উপকারী হতে পারে।
এসআর
মন্তব্য করুন: