[email protected] সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

সকালের নাস্তা না খেলে শরীরে যেসব ক্ষতি হয়

প্রতিদিনের বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর ২০২৫ ১২:৩৯ পিএম

অনেকেই ব্যস্ততা, সময়ের অভাব কিংবা ওজন কমানোর ভুল ধারণা

থেকে সকালবেলার নাস্তা না খাওয়াকে অভ্যাসে পরিণত করেছেন। কিন্তু পুষ্টিবিদ ও স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা বলছেন—দিনের প্রথম খাবার বাদ দিলে শরীরের শক্তি, হরমোন, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা এবং মেটাবলিজম—সবকিছুর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। দীর্ঘদিন ব্রেকফাস্ট না খেয়ে চললে শরীর নানা সমস্যায় ভুগতে শুরু করে।

নিচে সহজ ভাষায় নাস্তা না খাওয়ার কিছু বড় ক্ষতি তুলে ধরা হলো—

১. শক্তির ঘাটতি ও ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা

রাতভর না খেয়ে থাকার পর শরীর শক্তিহীন হয়ে পড়ে। ব্রেকফাস্ট সেই ঘাটতি পূরণ করে দিনের জন্য শরীরকে প্রস্তুত রাখে।

গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়, ফলে মাথা ঘোরা, বিরক্তিভাব, মনোযোগ কমে যাওয়া ও আলসেমি বেড়ে যায়।

নাস্তা এড়িয়ে গেলে ক্ষুধা হরমোন ‘গ্রেলিন’ বেড়ে যায়, যার কারণে দুপুরে অযথা বেশি খাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়—ওজন কমার বদলে উল্টো বাড়তে পারে।

২. মেটাবলিজমের গতি কমে যায়

নিয়মিত ব্রেকফাস্ট বাদ দিলে শরীর ‘লো এনার্জি মোডে’ চলে যায়। এতে ক্যালোরি পোড়ানোর হার কমে, বিশেষ করে পেটের মেদ বাড়ার ঝুঁকি থাকে। যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য এটি আরও বিপদজনক—মেটাবলিক সিনড্রোমের ঝুঁকি বাড়ে।

৩. মস্তিষ্কের কাজে ব্যাঘাত

মস্তিষ্কের প্রধান জ্বালানি হলো গ্লুকোজ। সকালে কিছু না খেলে মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত গ্লুকোজ পায় না। ফলে—

মনোযোগ ধরে রাখতে সমস্যা

ভুলে যাওয়া

সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা

সারাদিন ক্লান্ত লাগা


পড়াশোনা বা ‘ব্রেইনওয়ার্ক’-এর জন্য ব্রেকফাস্ট অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

৪. হৃদস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর

নিয়মিত নাস্তা না খেলে দেখা দিতে পারে—

উচ্চ রক্তচাপ

খারাপ কোলেস্টেরল বৃদ্ধি

ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স


এগুলো দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগের গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি তৈরি করে।

৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে

সকালের খাবার থেকে শরীর প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পায়। নাস্তা বাদ দিলে এ উপাদানগুলোর ঘাটতি ঘটে, ফলে—

সর্দি-কাশিতে বেশি ভোগা

ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়া

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া


নিয়মিত স্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্ট ইমিউন সিস্টেম শক্ত রাখে।

৬. সারাদিনের খাবারের নিয়ন্ত্রণে ব্যাঘাত

নাস্তা না করলে শরীর দ্রুত শক্তি চায়। ফলে অনেকেই—

অতিরিক্ত চিনি

ভাজাপোড়া

উচ্চ কার্বোহাইড্রেট খাবার


এগুলোর দিকে ঝুঁকে যায়, যা বাড়তি ক্যালোরি জমায় এবং হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে।

৭. বায়োলজিক্যাল ক্লক বা দেহঘড়ি বিঘ্নিত হয়

সকালের নাস্তা দেহের দৈনন্দিন ছন্দ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সুষম নাস্তা—যেমন ডিম, ফল, ওটস, দই—খেলে সারাদিন শরীর থাকে সক্রিয়, মন ভালো থাকে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর