কোষ্ঠকাঠিন্য আজকাল একটি অত্যন্ত সাধারণ সমস্যা। অনিয়মিত
খাদ্যাভ্যাস, কম পানি পান, প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ কিংবা ফাইবারের অভাব—সব মিলিয়ে বিশ্বজুড়ে লাখো মানুষ দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন। পেট পরিষ্কার না হলে অস্বস্তি, পেট ফাঁপা, ভারী লাগা, এমনকি মাথাব্যথাও দেখা দিতে পারে।
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে যেমন এই সমস্যা কমানো যায়, তেমনি কিছু প্রাকৃতিক পানীয় নিয়মিত গ্রহণ করলেও হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে। চলুন দেখি, এমন কোন তিনটি পানীয় কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে বিশেষভাবে সহায়ক—
১. উষ্ণ ভেষজ চা
উষ্ণ ভেষজ চা অন্ত্রকে স্বাভাবিকভাবে সক্রিয় করতে পরিচিত।
গবেষণায় দেখা গেছে—মৌরি বা গোলাপের মতো ভেষজ চা অন্ত্রের পেশী শিথিল করে এবং স্বল্পমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে কার্যকর।
ভেষজ চায়ের রেচক উপাদান মল নরম করতে সাহায্য করে
শরীরে তরলের মাত্রা বাড়ায়, ফলে মলত্যাগ সহজ হয়
ল্যাক্সেটিভ ওষুধের মতোই দ্রুত উপকার পাওয়া যেতে পারে
তবে দীর্ঘদিন নিয়মিত ভেষজ চা পান করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত—বিশেষত যাদের অন্যান্য রোগ বা ওষুধ সেবনের ইতিহাস আছে।
২. ম্যাগনেসিয়ামসমৃদ্ধ খনিজ পানি
ম্যাগনেসিয়াম শরীরে প্রাকৃতিকভাবে রেচকের মতো কাজ করে।
ম্যাগনেসিয়াম সালফেট বা সোডিয়াম সালফেটযুক্ত খনিজ পানি—
অন্ত্রে পানি টেনে এনে মলকে নরম করে
স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত মলত্যাগ বাড়ায়
হজম শক্তি উন্নত করে
৬ সপ্তাহের এক গবেষণায় দেখা গেছে, এমন পানীয় যারা নিয়মিত পান করেছেন, তাদের মলত্যাগের ফ্রিকোয়েন্সি এবং মান অন্যদের তুলনায় উন্নত হয়েছে।
সতর্কতা:
কিডনি রোগে আক্রান্তদের ম্যাগনেসিয়াম বেশি মাত্রায় গ্রহণ ঝুঁকিপূর্ণ—তাই এ ধরনের পানি পান করার আগে চিকিৎসকের অনুমতি প্রয়োজন।
৩. ফাইবারসমৃদ্ধ ফলের পানীয়
হজমে ফাইবারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপেল, নাশপাতি, কিউই, আলুবোখারা ইত্যাদি ফলের রসে—
প্রচুর পেকটিন থাকে, যা জেলের মতো পর্দা তৈরি করে মলের ভেতর পানি ধরে রাখে
আলুবোখারা ও নাশপাতিতে থাকা সরবিটল প্রাকৃতিক ল্যাক্সেটিভ হিসেবে কাজ করে
এই ফলের রস নিয়মিত পান করলে
মল নরম হয়
অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া সক্রিয় হয়
মলত্যাগ স্বাভাবিক থাকে
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ-ফাইবার যুক্ত ফল প্রতিদিন গ্রহণ করলে কোষ্ঠকাঠিন্য চোখে পড়ার মতো কমে।
সঠিক জীবনযাপন, প্রচুর পানি পান, পর্যাপ্ত ফাইবারগ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি এই প্রাকৃতিক পানীয়গুলো কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে রাখতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তবে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
এসআর
মন্তব্য করুন: